গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিকদের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে চেরাগ আলীতে যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেডের ছাঁটাইকৃত ও নিয়মিত শ্রমিকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ কারাখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেডে দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। গত ২২ এপ্রিল কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেন। এরপর থেকে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে নিয়মিত শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করে আসছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকেরা স্বপ্রণোদিতভাবে কাজে এলে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকেরা এতে বাধা দেন। এতে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ পরিস্থিতিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
আহতদের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- রুহুল আমিন (৫০), ফাহিমা (৩০), বাদল হোসেন (৪৫), আশরাফুল আলম (২৫), অজয় কর (৪৮), রুমা (২৬), শাহাদাত (৪০) ও বিথী রাণী সাহা (৪০)। তারা টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষে আহতরা বিচারের দাবিতে টঙ্গী পূর্ব থানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষকালে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ সময় পুলিশ হৃদয় নামের এক শ্রমিককে আটক করলেও পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার কোয়ালিটি বিভাগের জাকারিয়াসহ একাধিক নিয়মিত শ্রমিক বলেন, “তাদের আইন অনুযায়ী ছাঁটাই করা হয়েছে। তারা ২-৩ মাস বসে খেতে পারবে। কিন্তু আমাদের তো বেতন না পেলে চলার উপায় নেই। তাই আমরা ফ্যাক্টরিতে কাজে এসেছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চাকরিচ্যুতরা আমাদের ওপর হামলা করে।” তবে হামলার অভিযোগ করছে চাকরিচ্যুতরাও।
এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে কারখানাটির মালিকপক্ষ ও এডমিন অফিসারকে কল দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।