চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে গাজীপুর মহানগরীর জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ করছেন। অবরোধের কারণে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। সড়ক বন্ধ থাকায় অনেকেই বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন।
অক্টোবরের বকেয়া বেতনের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সড়কটি অবরোধ করে রাখেন তারা। ৮ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবার মঙ্গলবার সকালে তারা সড়কে অবস্থান নেন।
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের অংক ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন তারা বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এ কারণে বৃহস্পতিবার আন্দোলন শুরু করেন তারা। বেক্সিমকো কারখানার এই সমস্যার সূত্র ধরে সোমবার সংঘর্ষ হয় অন্য কয়েকটি কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে। উত্তেজিত শ্রমিকরা অ্যামাজন গেঞ্জি কারখানায় আগুন দেয়। পরে আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন ভাতা পরিশোধ করা হলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পাননি, যার ফলে তারা আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিক আরমান হোসেন বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত অক্টোবরের বেতন পাইনি। বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।”
এদিকে ডরিন কারখানার শ্রমিক আহমদ সাত্তার বলেন, “আমাদের বেতন বকেয়া নেই। তবে আমাদের কারখানা বন্ধ রাখায় সড়ক অবরোধ করে রেখেছি।”
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “গতকাল সারা দিন অবরোধ করে রেখে তারা রাতে সড়ক ছেড়ে দেন। বেতন না পেলে সড়ক না ছাড়ার ঘোষণাও দিয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেবে, এমন কোনো আশ্বাস এখন পর্যন্ত দেয়নি। তবে পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছে।”