শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন পথচারীরা, অন্যদিকে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে সার্বক্ষণিক। এতকিছুর পরও বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো অপসারণে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। উল্টো এলজিইডি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
সম্প্রতি উপজেলার লাউখোলা-গজনাইপুর চরধুপুড়িয়া ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাঝে ৭টি বৈদ্যুতিক খুটির কারণে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন ও এলাকার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাতের অন্ধকারে পথচারী ও যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাই পল্লী বিদ্যুতের ওই খুটিগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জাজিরা উপজেলার অধীনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গত বছর উপজেলার লাউখোলা-গজনাইপুর চরধুপুড়িয়া যাওয়ার নদীতে নতুন ব্রিজের কাজ শেষ হয়। কিন্তু রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের একাধিক খুঁটি থাকলেও কাজের তালিকা করার সময় খুঁটি অপসারণের কোনো নির্দেশনা বা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই খুঁটিও অপসারণ করা হয়নি। যার কারণে খুঁটি রেখেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ শেষ করে চলে যান। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয়রা।
আব্বাস সরদার নামের স্থানীয় এক ভ্যানচালক বলেন, “ব্রিজটি হওয়ায় আমাদের এলাকার লোকদের চলাচলে অনেক সুবিধা হয়েছে। কিন্তু ব্রিজের দুইপাশে রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় আমি সবসময় ভয়ে ভয়ে এখান দিয়ে চলাচল করি।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী সজীব সিকদার সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এখানে ব্রিজ হওয়ায় দুপাশের মানুষের ভোগান্তি কমেছে। কিন্তু সেতুর দুইপাশে সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুতের তারগুলো ঝুলে অনেক নিচে চলে আসায় বড় ধরণের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।
অটোরিকশার চালক আব্দুর রাজ্জাক খালাসী বলেন, “এখান দিয়ে আমি নিয়মিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করি। সবসময় ভয়ে চলতে হয়। কারণ বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ব্রিজের দুইপাশে রাস্তার ঠিক মাঝে আছে।”
লাউখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাদবর সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সড়কটি নির্মাণের সময় জাতীয় নির্বাচন ছিল। আমি পল্লী বিদ্যুৎ ও এলজিডি কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. ইমন মোল্লা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিদ্যুৎ অফিসে আমরা মৌখিকভাবে জানালে হয় না, তারা টাকা চায়। আর আমাদের টাকা দেওয়ার মতো কোনো বরাদ্দ নেই। একটা বিদ্যুতের খুঁটি ওঠাতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এত টাকা দিয়ে আপাতত আমরা খুঁটি সরাতে পারব না।“
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. আলতাপ হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সড়কের কাজ করার আগে বা পরে এলজিইডি কিংবা ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে খুঁটি সরাতে হবে এমন কোনো লিখিত আবেদন পাইনি। তাই এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”