কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে টানা ১১ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে অবস্থান করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
মৃদু শৈত্যপ্রবাহে সূর্যের দেখা না মেলায় ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ঠান্ডার মাত্রা। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাপমাত্রা দীর্ঘ সময় নিম্নগামী থাকায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এদের মধ্যে বয়স্ক ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১২টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নেওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ৩৩ জনই শিশু। শিশু ওয়ার্ডে ৪৮টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছে ৬২ শিশু। এছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ডে ৭৮টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় দ্বিগুণ রোগী। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৫০০ থেকে ১৮০০ রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও একই অবস্থা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কর্তব্যরত নার্স মোছা. শামসুন্নাহার বলেন, “কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আমাদের এখানে প্রতিদিন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের বাড়তি চাপ নিয়েই চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।”
শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা সানজিদা নামের এক অভিভাবক বলেন, “আমার বাচ্চার বয়স ৭ বছর। দুইদিন ধরে ঠান্ডায় সর্দি ও কাশিতে ভুগছে। আজ ডাক্তার দেখাতে আসলাম।”
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা নেয়া হাসি বেগম বলেন, “গতকাল হাসপাতালে আসছি ডায়রিয়ার জন্য। আমাদের এখানে কয়দিন ধরে খুব ঠান্ডা ও কুয়াশা। এ কারণে পেটে সমস্যা দেখা দিয়েছে।”
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিনুর রহমান শিপন বলেন, “শীতের শুরু থেকেই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। আমরা এই রোগীর চাপ সামাল দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি।”