খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে। ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তফসিলে খুলনা সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে ও ভোট ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে থেকেই খুলনায় বেশ কয়েকজন মেয়রপ্রার্থী সরব হয় উঠেছেন। নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে। তবে মেয়র পদে এখন পর্যন্ত বিএনপির কোনো নেতার পক্ষে প্রার্থিতার বার্তা আসেনি।
সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী প্রার্থীরাও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে পোস্টার ছাপিয়ে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছেন। মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা আবদুল গফফার বিশ্বাস, জাপা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, সাবেক জাপা নেতা এস এম মুশফিকুর রহমান, আগুয়ান-৭১-এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী। আর বিএনপি নির্বাচনে গেলে প্রার্থী তালিকায় আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু (সাবেক এমপি খুলনা-২), সাবেক খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি এবং বর্তমান মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা যা বলছেন
মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, “অনেক আগে থেকেই আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। এমনকি আমার দলও নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে। আমি মডেল খুলনা গড়ার জন্য কাজ করছি।”
এস এম মুশফিকুর রহমান বলেন, “খুলনা সিটিকে উন্নয়নের মডেল করব যদি নির্বাচিত হতে পরি। খুলনাকে এগিয়ে নিতে চাই। ২০২৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি আবারও মেয়র পদে প্রার্থী হতে চাই। এবার দলের দাসত্ব বর্জন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাই।”
মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “নগরবাসীর অধিকারগুলোকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আগুয়ান-৭১-এর তরুণরা রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিগত ৫০ বছরের গতানুগতিক রাজনীতি এবং দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে আগুয়ান-৭১-এর তীব্র আপত্তি থাকলেও আমরা মনে করি নির্বাচনকে তরুণদের একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া উচিৎ। আমরা বিশ্বাস করি, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তরুণদের ঐক্যবদ্ধতা খুলনার রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।”
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “আমার দল তো এ কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এর কারণে সব জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে।”
নজরুল ইসলাম মঞ্জু আরও বলেন, “২০১৮ সালের পর তো বিএনপি কোনো নির্বাচন করেনি। প্রায় পাঁচ বছর। নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নেওয়া যায় কিনা সেটা ভাবার জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করবো। নতুন এ কমিশনের অধীন নির্বাচন অবাধ হতে পারে না এটা প্রমাণ করার জন্য যদি পরিবেশ পাওয়া যায় যেটা বড় চ্যালেঞ্জ।”
অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, “সিটি নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই আমাদের। আমরা এখন আন্দোলনে আছি। এসব নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। আমাদের কথা স্পষ্ট আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে তারপর এসব স্থানীয় নির্বাচন।”
২০১৮ সালের ১৫ মে সর্বশেষ কেসিসি নির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পান ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট।