• ঢাকা
  • সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩০, ১৬ রমজান ১৪৪৬

নওগাঁয় বেড়েছে গমের আবাদ


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
নওগাঁয় বেড়েছে গমের আবাদ

শস্য ভাণ্ডারখ্যাত বরেন্দ্র জেলা হিসেবে পরিচিত নওগাঁ জেলা। এ জেলায় দিন দিন বাড়ছে গমের চাষ। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বেশি গম চাষ হয়েছে।

এক সময় নওগাঁর উঁচু বরেন্দ্রভূমি এলাকায় প্রচুর গম চাষ হতো। তবে ভালো দাম না পাওয়ায় এবং ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে নওগাঁয় গম চাষ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বর্তমানে সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন জেলার গম চাষিরা। কম খরচ ও দাম ভালো থাকায় গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে তাদের।

কৃষকরা বলছেন, গত বছর গমের ফলন ভালো হয়েছিল। স্থানীয় বাজারে গমের দামও ভালো ছিল। এ কারণে তারা এবার গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া গম চাষের জন্য এখন পর্যন্ত ভালো আছে। ক্ষেতে রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও তারা ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৪-২০২৫ রবি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ১৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে জেলায় গমের আবাদ হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর। সেই হিসাবে পাঁচ বছরে জেলায় গমের আবাদ বেড়েছে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর।

চলতি বছর নওগাঁ সদর উপজেলায় গমের আবাদ হয়েছে ৭৩০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৩৯০ হেক্টর, রাণীনগরে ৩৩০ হেক্টর, বদলগাছীতে ৮০০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৩৫০ হেক্টর, মান্দায় এক হাজার ১৫০ হেক্টর, সাপাহারে তিন হাজার ৮৫০ হেক্টর, পোরশায় চার হাজার ৮২০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে তিন হাজার ৫০ হেক্টর, পত্নীতলায় ১১০০ হেক্টর এবং ধামইরহাট উপজেলায় ১২০০ হেক্টর।

চলতি মৌসুমে নওগাঁর পোরশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। এরপরই আবাদ হয়েছে সাপাহার উপজেলায় ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর।

পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এবার চার বিঘা জমিতে বারি গম-৩৩ জাতের গম আবাদ করেছি। ক্ষেতে এখন পর্যন্ত কোনো রোগ-বালাই লাগেনি। গত বছর তিন বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছিলাম। প্রতি বিঘায় গড়ে ১৪ মণ করে ফলন হয়েছিল। গতবারের চেয়ে এবার গম ভালো হচ্ছে। আশা করছি এবার ৫৫-৬০ মণ গম হবে।”

নওগাঁ সাপাহরের কৃষক কুমুজ আলী বলেন, “গম চাষে পরিশ্রম নেই বললেই চলে। বীজ রোপন আর ফসল কেটে ঘরে তোলার ঝামেলা ছাড়া তেমন কিছু করতে হয় না। তবে শুরুর দিকে অল্প সেচ আর মাঝে কিছু সময় কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। অন্যান্য ফসল চাষের তুলনায় গম চাষে অনেক সুবিধা রয়েছে।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, গম চাষের জন্য পানি কম জমে এমন উঁচু জমি উপযোগী। নওগাঁর পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার অনেক এলাকার জমি বেশ উঁচু। এজন্য এসব এলাকায় জেলার অন্যান্য এলাকার তুলনায় গমের ফলন বেশি হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৫০০ প্রান্তিক কৃষককে প্রতি বিঘা জমির জন্য বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।”

Link copied!