• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে জাহাজ

জিম্মি হওয়ার আগে ফেসবুকে যা লিখেছিলেন নাবিক সাব্বির


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৮:১৫ পিএম
জিম্মি হওয়ার আগে ফেসবুকে যা লিখেছিলেন নাবিক সাব্বির

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে একজন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সাব্বির হোসেন।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। পরে জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যায় তারা। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর ছেলের জন্য আহাজারি করতে থাকেন বাবা মা। আত্মীয় স্বজনরা তাদের বাড়িতে এসে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার বলেন, “আমার ভাই গত সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে ফেসবুকে  লিখেছে যে ‘বিষুব রেখা অতিক্রম করলাম’। মাথা ন্যাড়া করে ছবি আপলোড করেছে। এক মাস আগে সে বাড়ি আসছিল। একদিন থেকেই চলে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাবা মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে ‘আমার ছেলেকে এনে দাও’। আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা মাকে বাচাঁনো যাবে না। অতি দ্রুত আমার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”

ছেলে জিম্মি হওয়ার খবর শুনে নির্বাক হয়ে পড়েছেন সাব্বিরের বাবা হারুন অর রশিদ। বারবার কান্না করতে করতে সাব্বিরের মা সালেহা বেগম বলেন, “আল্লাহ আমার ছেলেকে তুমি ভালোভাবে ফিরেয়ে দাও।”

সহবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, “সাব্বির আমাদের এলাকার গর্ব। সাব্বিরের পরিবারের জন্য সবসময় আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে। সাব্বির আমাদের মাঝে ফিরে আসুক এটাই আমারদের প্রত্যাশা।”

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, “সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে চেষ্টা করছে। আশা করছি, দ্রুতই সুখবর পাওয়া যাবে।”

উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে সাব্বির হোসেন ২০১৪ সালে থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর টাঙ্গাইলের কাগমারি এম এম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন।

Link copied!