• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সমর্থিত প্রার্থীদের হার নিয়ে যা বললেন জাহাঙ্গীর


গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৪, ০৫:৫৬ পিএম
সমর্থিত প্রার্থীদের হার নিয়ে যা বললেন জাহাঙ্গীর
জাহাঙ্গীর আলম। ফাইল ফটো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের দুটি আসনের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তবে তারা দুজনই নৌকার প্রার্থীদের কাছে হেরেছেন। তারা হলেন গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল এবং গাজীপুর-২ আসনের কাজী আলীম উদ্দিন।

অপর দিকে এই দুই আসনে যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা হলেন গাজীপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও গাজীপুর-২ আসনের জাহিদ আহসান রাসেল জয়।

ফলাফল ঘোষণার পর এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি হারিনি, হেরেছেন তারা (নৌকার দুই প্রার্থী)। তারা আওয়ামী লীগকে দুর্বল করেছেন। দুই মন্ত্রীর বোঝা উচিত ছিল, আওয়ামী লীগের লোকজন ২ লাখ ভোট তাদের বিপক্ষে দিয়েছে। ২০১৮ সালের ভোটে আ ক ম মোজাম্মেল পাইছিলেন প্রায় ৪ লাখ ভোট। এ বছর পাইছেন ১ লাখ ভোট। তাহলে আওয়ামী লীগের ৩ লাখ ভোট তার থেকে সরে গেছে। জাহিদ আহসান রাসেল পাইছিলেন পৌনে ৫ লাখ ভোট। এবার ৩ লাখ ভোট ছুইটা গেছে। তার মানে দেখেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর ভোট আওয়ামী লীগ থেকে ছুটে গেছে।”

জাহাঙ্গীর আলমের বলেন, “আমি চারটি আসনের প্রার্থীর পক্ষে ছিলাম। সেখানে দুজন প্রার্থী হেরেছেন, কিন্তু অন্য দুজন জিতেছেন। আমি সিমিন হোসেন রিমির (গাজীপুর-৪) পক্ষেও ছিলাম। শুধু রেজাউল ও আলীম উদ্দিন হারছেন। মন্ত্রী হওয়ার পর ভোট কমছে, এর মানে হলো তারা এলাকায় সুশাসন দেননি, নেতাদের মূল্যায়ন করেননি। ক্ষমতায় থাকার পর ভোট কমে কীভাবে? এটা প্রমাণের জন্য ভোটে স্বতন্ত্রদের সাপোর্ট দিয়েছি আমি।”

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। খেলাপি ঋণ থাকার কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। আপিল করেও মনোনয়ন ফিরে না পাওয়ায় তিনি তার মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনী মাঠে থাকায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। নিজের মনোনয়ন বাতিল, দলীয় পরিচয় হারানোর পরও মাকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে দৃঢ় অবস্থান নেন জাহাঙ্গীর আলম। ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে হারিয়ে জয়ী হন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।

এর আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি বিতর্কিত বক্তব্যের জেরে জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয় পদ হারাতে হয়। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় মেয়র পদ থেকে। তার বরখাস্তের পেছনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের হাত ছিল বলে বিভিন্ন সময়ে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ কারণে তিনি এবার সংসদ নির্বাচনে নিজে প্রার্থী না হয়ে গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল, গাজীপুর-২ আসনের কাজী আলীম উদ্দিন ও গাজীপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামানকে সমর্থন দেন। গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এই তিন প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালান তিনি।

নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গাজীপুরে পাঁচটি আসনের চারটিতেই জয়লাভ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একটি আসনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে গাজীপুর-১ আসনে আ ক ম মোজাম্মেল হক ১ লাখ ৯ হাজার ২১৮ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেজাউল করিম রাসেল ৯২ হাজার ৭৮৮ ভোট পেয়েছেন।

গাজীপুর-২ আসনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী জাহিদ আহসান রাসেল ১ লাখ ৪ হাজার ৪৭৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী আলীম উদ্দিন ৮৪ হাজার ১২৯ ভোট পেয়েছেন। 

Link copied!