আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত বিচার করার বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া চুনতি ফারাঙ্গা এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জেয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আলিফের জন্মভূমির কাছে, তার পিতা-মাতার কাছে, ভাই-বোনদের কাছে, আপনাদের কাছে এই মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, আলিফের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত বিচার আমরা করবই। আলিফের হত্যাকারী যেই হোক, যতই শক্তিশালী হোক, হত্যাকারীরা আইনের আওতার বাইরে যেতে পারবে না।”
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যেটা করণীয়, সেটা আমারা করছি। আলিফ যেমন তার পিতার সন্তান, তেমনিই আলিফ আমাদের পরিবারের গর্বিত সদস্য ছিলেন। আমরাও আলিফের আরেকটি পরিবার হিসেবে পাশে থাকব।”
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, “আলিফ দ্বিতীয় প্রজন্মের যুদ্ধেত্তোর বাংলাদেশ উপহার দিতে রাজপথে সহকর্মী ছিলেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল মনে করে, বাংলাদেশের প্রতিটি আইনজীবী তাদের সহযোদ্ধা, তাদের ভাই, তাদের বোন, তাদের আত্মার আত্মীয়। আলিফ একইভাবে বাংলাদেশের ৭০ হাজার আইনজীবী পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সেই পরিবারের সদস্যকে হারিয়ে অত্যন্ত শোকাহত মর্মাহত।”
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, বার অ্যাসোসিয়শনের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দীন খান, সাতকানিয়া লোহাগাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন ও লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইনামুল হাসান।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর তার অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরে একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে।