মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ফরিদপুরে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তরমুজ আবাদে বিগত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব না থাকায় ফলনের কোনো বিপর্যয় হয়নি। এ অঞ্চলের সুস্বাদু মিষ্টি তরমুজ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রোজার মাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। এতে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে জামালপুর সিডের এশিয়ান টু জাতের তরমুজের সমারোহ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন হয়েছে ভালো। রোজার মাসে তরমুজের চাহিদা এলাকার চাহিদা পুষিয়ে ফরিদপুরের তরমুজ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। দাম গতবারের তুলনায় একটু কম থাকলেও এবার ফলন ভালো হওয়াতে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা।
রোগ ও পোকার আক্রমণ না থাকায় বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার তরমুজের ফলনে কোনো বিপর্যয় হয়নি, ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সন্তুষ্ট তারা। কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ফলন পেয়ে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে মনে করছেন চাষিরা। স্থানীয় চাহিদা মিটানোর সঙ্গে সঙ্গে ফরিদপুরের উৎপাদিত তরমুজ চলে যাচ্ছে বাইরের জেলাগুলোতে।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের তরমুজ চাষি গোপাল বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে ; ফলে আমরা লাভবান হতে পারব বলে মনে করছি। এ বছর ফলনে কোনো বিপর্যয় নেই। তাই ফলন ভালো হয়েছে।”
একই এলাকার আরেক চাষি ফজল বলেন, “আমাদের ফরিদপুরের তরমুজ অন্য যেকোনো জেলার তরমুজ থেকে অনেক বেশি সুমিষ্ট। এর চাহিদা রয়েছে জেলা ও জেলার বাইরে। আমি গতবারের থেকে এবার বেশি তরমুজ লাগিয়েছি। তবে আমার তরমুজ এখন মাঝ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি রোজার শেষের দিকে বাতি হবে। তখন ক্ষেত থেকে বেপারির মাধ্যমে বিক্রি করব।”
জামালপুর সিডের এশিয়ান টু জাতের ফরিদপুরের সরবরাহকারী তাপস দত্ত বলেন, “অনেক জাতের তরমুজ থেকে এশিয়ান টু জাতের তরমুজ অনেক বেশি মিষ্টি ও বড় সাইজের হয়। আমি এসব এলাকার চাষীদের কাছে শুধু বীজ বিক্রি করেই থেমে নেই। ক্ষেতে এসে প্রতিনিয়ত তদারকিও করেছি।”
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. জিয়াউল হক বলেন, “এবারে জেলায় গতবারের থেকে তরমুজের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। ফলন ভালো হওয়ায় তরমুজ আবাদে তাদের আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে রোজার সময় তরমুজ পরিপক্ব হওয়াতে কৃষকরা বিক্রি করে এবার অধিক লাভবান হচ্ছেন।”
তরমুজ উৎপাদনে কৃষি বিভাগ আরও বেশি জোরালো ভূমিকা নেবে সামনের দিনগুলোতে এমনটাই দাবি এসব এলাকার তরমুজ চাষিদের।