• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোট গ্রহণ শুরু


গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৯:৩৩ এএম
গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোট গ্রহণ শুরু

অনিয়মে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ আবার শুরু হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ভোট গ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচনের প্রতিটি কেন্দ্র ও কক্ষে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। তবে তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে ভোটারদের উপস্থিতি বেশ কম রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয় ইভিএমসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এসব সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাক অথবা পিকআপ ভ্যানযোগে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা। বিকেলের মধ্যে চরাঞ্চলসহ সব কেন্দ্রেই নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে যায়।

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রে এসব ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ভোট গ্রহণের জন্য কেন্দ্রগুলোতে ইভিএমসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পাঠানো হচ্ছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যের নিরাপত্তার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ২৪২টি সিসিটিভি ক্যামেরা। ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়া নির্বাচনের দিন যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ করতে বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

নির্বাচনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহিদ রঞ্জু, বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত বছরের ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

ওই আসনে ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলাকালে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।

অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ঘটনা তদন্ত করে ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে বাকি ৯৪টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়।

তদন্তে ১২৫ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পাঁচটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পাঁচ পুলিশ উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তদন্ত শেষে ৬ নভেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
 

Link copied!