লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে স্থানীয় ১৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন বটতলী কচুয়া সড়কের বটতলী-দত্তপাড়া বাজার পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু করেন।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ বন্যার কারণে ছোট-বড় প্রায় সবগুলো সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। পরে পানি কমতে শুরু করলেও সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে নোয়াখালী জেলার চাটখিল ও লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে চন্দ্রগঞ্জ থানার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এসব এলাকার হাটবাজারগুলোতে পণ্য পরিবহন ও নিরাপদ যাতায়াত বিঘ্নিত হতে থাকে।
পরে স্থানীয় হামদর্দ ফাউন্ডেশন, সৈয়দপুর ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘ, আলোকিত দক্ষিণ মাগুরী, পদ্মপুকুর পাড় ফাউন্ডেশন, রাজাইমেকহা মেডিকেল ক্লাব, আলাদাদপুর সমাজ কল্যাণ সংস্থা, একতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, পূনিয়ানগর দুর্বার সংঘ, উত্তর জয়পুর ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম, জাগরণ সমাজকল্যাণ সংস্থা, আনন্দবাজার, অনলাইন হেল্প জোন ফাউন্ডেশন, খিদমাহ ফাউন্ডেশন, তারুণ্য শক্তি সংস্থা, আল করীম ফাউন্ডেশনসহ ১৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেন।
পদ্মপুকুর পাড় ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাইফুল আলম সবুজ বলেন, “এই সড়কটি দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় এটি আগ থেকেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সম্প্রতি জেলায় ভয়াবহ বন্যায় সড়কটি আরও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে এই সড়কের দুপাশের প্রায় তিন লাখ মানুষের চলাচলে মানবেতর জীবনযাপন করে। তাই স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা স্বেচ্ছাসেবীরা সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করি।”
সৈয়দপুর ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা স্বেচ্ছাসেবীরা ইট ও বালু দিয়ে সড়কের গর্তগুলো মেরামত করেছি।”
সৈয়দপুর অনলাইন হেলপ জোন ফাউন্ডেশনের সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, “আমরা ১৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ সড়কটি মেরামত করছি। আমাদের সঙ্গে পুনিয়া নগর মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরাও অংশ নিয়েছেন। সড়কটি মেরামত করার ফলে এ এলাকার মানুষের নিরাপদ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ হয়েছে।”
এদিকে বন্যার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করায় খুশি স্থানীয়রা। সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. হেলাল, জয়নাল ও রুবেল বলেন, “আমরা প্রতিদিন এই সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল করি। কিন্তু সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে ছিল। সম্প্রতি বন্যায় বড়-বড় গর্ত হয়ে এটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। পরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা সড়কটির কাজ করায় এখন আমরা যাত্রী নিয়ে কিছুটা নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারা, হারুন, তোফায়েল, সুইটি ও সেলিনা বেগম বলেন, “বটতলী-দত্তপাড়া রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে করুণ অবস্থায় পড়ে ছিল। খানাখন্দে সড়কে পথচারীদের দুর্ভোগ ছিল অনেক। তার ওপর বন্যায় আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। এখন স্বেচ্ছাসেবীরা গর্তে ইট-বালু দিয়ে সংস্কার করায় আমরা কিছুটা স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারছি।”