গভীর রাতে জানালা খুলে ঘুমালে মোবাইলে করতেন ভিডিও ধারণ। সুযোগ পেলে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় নারীদের শ্লীলতাহানিও করতেন। দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটলেও তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
গত ২২ এপ্রিল রাতে ভিডিও করার সময় ওই ব্যক্তিকে দেখে ফেলেন এক ব্যক্তি। এসময় তিনি পালিয়ে গেলেও ফেলে যান তার মোবাইল। ওই মোবাইল গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারীদের প্রায় দেড় শতাধিক ভিডিও পাওয়া যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার শাপখোলা গ্রামে। ঘটনার পর ওই এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
গ্রামবাসী জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তারা চিনতে পারেননি। সেই মোবাইলটি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সাইবার অপরাধ দল ঘটনাটি তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার (২৯ এপ্রিল) তিনজনকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে নারীরা ঘুমানোর পর তাদের ঘুমন্ত অবস্থার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হতো। এমনকি জানালা দিয়ে নারীদের শরীরে হাত ও লাঠি দিয়ে খোঁচা দেওয়া হতো। নারীরা টের পেয়ে চিৎকার দিলে ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যেতেন।
আবদুল মান্নান বিশ্বাস নামের গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “গ্রামে দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে গ্রামের যুবকেরা বিষয়টি নজরদারি করতে থাকেন। কিন্তু পাহারা দিয়েও তাকে ধরা যায়নি।”
ফেরদৌস বিশ্বাস নামের এক বাসিন্দা বলেন, “ঈদের দিন রাত তিনটার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে কেউ মোবাইলে ভিডিও করার চেষ্টা করছিলেন। এতে তার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি ওই ব্যক্তির হাতে আঘাত করেন। তখন মোবাইলটি ঘরের ভেতরে পড়ে গেলেও ওই ব্যক্তি পালিয়ে যান। তার মুখ গামছা দিয়ে বাধা ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “ওই ব্যক্তির ফেলে যাওয়া মোবাইলে গ্রামের অনেক নারীর বিভিন্ন ধরনের ভিডিও পাওয়া গেছে। কিন্তু কাজটি কে করেছেন, সেটা জানা যাচ্ছে না। মোবাইলের তথ্য দিয়েও তারা বের করতে পারেননি।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি টিটু সিকদার জানান, তারা ওই মোবাইলের মালিককে খুঁজতে তিন দফা বৈঠক করেছেন। কিন্তু সন্ধান পাননি। শেষে গত ২৬ এপ্রিল মোবাইলটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশ তৎপরতা শুরু করেছে। এক কিশোরসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নিয়ে গেছে। ঘটনার পর গ্রামে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এই বিষয়ে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি খুবই আপত্তিকর। আপাতত বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। পুলিশের সাইবার অপরাধ দল বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।”