• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাট ভবন নির্মাণে লোহার পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
হাট ভবন নির্মাণে লোহার পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর হাটে দুই তলাবিশিষ্ট একটি হাট ভবন নির্মাণে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে  এ ভবন নির্মাণে ঠিকাদার বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর সেরাজুল ইসলাম। তিনি সরকারের বেঁধে দেওয়ার সময় মানতে রাজি নন। 

এদিকে নিম্নমান ও নিময় না মেনে কাজ করার জন্য প্রকৌশল অফিস থেকে দুই দফা  চিঠি দিলেও কোনো লাভ হয়নি।

এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ হাটের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতাসহ এলাকাবাসী । তবে নিয়ম না মেনে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী।

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সারা দেশব্যাপী হাট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আওতায় বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর বাজারে দুই তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মেসার্স লিটন এন্টারপ্রাইজ চুক্তিবদ্ধ হয়। এতে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। বিভিন্ন প্রকারের ব্যয়ের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল সাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহার ধরা থাকলেও ঠিকাদার ইচ্ছামতো বাঁশের ব্যবহার করে যাচ্ছে। কাজটি ২০২৪ সালের গত এপ্রিল মাসে শেষ করার কথা থাকলেও  কাজ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ।  কাজের মান ও কাজের বিবরণীতে স্টিল শাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশল অফিস থেকে বার বার তাগাদা দিলেও প্রভাব ও দাপট দেখিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার। 

দেখা যায়, ভবনটিতে প্রথম তলার ঢালাই করার জন্য কাঠ ও বাশ দিয়ে ফ্রেম করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকার পতন হলেও মীর সেরাজুল দলীয় প্রভাবে এখনো জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসের সঙ্গে যোগসাজশ করে যেনতেন কাজ করে শেষ করতে চাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, ভবনটি যেন সঠিকভাবে করা হয়।

এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, “আমরা গত মাসে ডিজাইন মোতাবেক ও মানসম্মত সামগ্রী ব্যবহারের জন্য দুই দফা চিঠি দিয়েছি। এই কাজের ক্ষেত্রে স্টিল ও লোহার পাইপ দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের উল্লেখ আছে। কিন্তু ঠিকাদার এখন পর্যন্ত বাশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য ফ্রেম করেছে। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাই দিলে এই ধরনের বড় মানের ভবনের জন্য ক্ষতিসাধন করতে পারে। এভাবে নির্মাণ হলে ভবনের স্থায়িত্বকাল কমিয়ে দেয়। আমাদের এই কাজে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল সাঁটার ধরা আছে।”

এ বিষয়ে ঠিকাদার মীর সেরাজুল ইসলাম বলেন, বাঁশ সাঁটারে ব্যবহার করলে কি সমস্যা, স্টিল শাটার ব্যবহার করব কি না, আমার ব্যাপার। ভবন ভেঙে গেলে ক্ষতিপূরণ আমাকে দিতে হবে তাতে অন্যের সমস্যা কি।

এ বিষয়ে অফিস সব জানে ও সমন্বয় করে কাজ কারা হচ্ছে জানান তিনি। কাজে ধীরগতি কেনো এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ভবনের সাটারিংয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া আছে। সেহেতু কোনোভাবেই বাস ও কাঠ দিয়ে শাটারিং দেওয়া যাবে না। ঠিকাদারকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে ৭ দিনের মধ্যে বাঁশ ও কাঠের সাটারিং খুলে ফেলার কথা বলা হয়েছে। 

Link copied!