পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ব্রাশফায়ারে নিহত ১৬ জন শহীদের স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর মান্দা উপজেলার মনোহরপুর বধ্যভূমি আজও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এলজিইডির তত্ত্বাবধানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। সে সময় বধ্যভূমিতে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করে এলজিইডি। তবে কাজ শুরুর পরপর ভূমি জটিলতায় তা বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতবছর ঝড়ে ভেঙে পড়েছে মূল ফটকের সাইনবোর্ড। যা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে শহীদ পরিবার ও গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, বিজয়ের ৩ দিন আগে মনোহরপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প রয়েছে, এমন খবরে গ্রামটিতে আক্রমণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ১০-১২টি বসতবাড়ি ও আটক করে মনোহরপুর, তুডুকগ্রামসহ ৫ গ্রামের ১৬ জন মুক্তিকামী মানুষকে। পরে গ্রামের পশ্চিমধারে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয় তাদের।
স্থানীয়রা আরও জানান, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে বধ্যভূমির পশ্চিম পাশে একটি শহীদ মিনার ও তার পাশে শহীদদের একটি নামফলক স্থাপন করা হয়।
জানা যায়, মনোহরপুর মৌজার আরএস ১২০ খতিয়ানভুক্ত ২৫০ দাগের ১৮ শতক জমিতে ১৯৭১ এর ১৩ ডিসেম্বর গণহত্যাটি সংঘটিত হয়েছিলো। ওই খতিয়ানভূক্ত জমির মালিকরা বধ্যভূমির প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিলে জটিলতার সৃষ্টি হয় এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারও কাজ রেখে মালপত্র গুছিয়ে চলে যান। তাতেই অরক্ষিত বধ্যভূমির প্রাচীর নির্মাণ কাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সাবেক ইউপি সদস্য রুমালি পারভিন জানান, এই বধ্যভূমির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মৃতি জড়িত। এতদিনে জটিলতা নিরসন না হওয়াটা দুঃখজনক।
মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, ভূমি জটিলতায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ। জটিলতা নিরসন হলে শিগগিরই কাজটি সম্পন্ন করা যাবে।