দীর্ঘ দুই যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম। যার ফলে উপজেলার শিল্প সংস্কৃতি চর্চা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে।
উপজেলা হাসপাতাল রোডের ধর্মপাশা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে এই শিল্পকলা একাডেমির অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে এটি বন্ধ থাকায় স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পমনাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির দীর্ঘ বছর ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ২০১৬সালের শেষ দিকে এটি গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছিল। তখন স্থানীয় কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মীর উদ্যোগে তা ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে। পার্শ্ববর্তী বাসা থেকে দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ সংযোগ। সংস্কৃতিকর্মীদের আনাগোনাও ছিল কিছুদিন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ও এর কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আবারও তালা ঝুলানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও থেমে থাকেনি সরকারি বরাদ্দে মেরামত, চালের টিন পরিবর্তন ও রঙ করার কাজ। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে এডিপির অর্থায়নে এটি সর্বশেষ মেরামত করা হয়। বাহ্যিক দিক রঙ করাসহ অভ্যন্তর সাজানো হয় পরিপাটি করে। লাগানো হয় এসি। ঝমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তা উদ্বোধনও করা হয়।
কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিল্পকলা একাডেমির প্রকৃত কার্যক্রম চালু না করায় তখন শিল্পকলায় বহিরাগতদের আনাগোনা, গান বাজনার নামে শিল্পকলায় রাত্রি যাপনসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ ওঠে। ফলে প্রশাসন আবারও গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শিল্পকলায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
স্থানীয় সাজিদুর রহমানসহ অনেকেই জানান, ২০১৪ সালে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সংস্কৃতিদের নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি সফলতার মুখ দেখনি। এরপর আর কোনো কমিটিও গঠন করা হয়নি। দায়িত্বশীলরা গুরুত্ব সহকারে উদ্যোগ নিলেই উপজেলায় সংস্কৃতিদের মিলন মেলায় পরিনত হবে। শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাও হবে।
উপজেলা সাহিত্য অনুশীলনের সমন্বয়ক ও শিক্ষক নজমুল হায়দার বলেন, “উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এটি চালু করতে শুধু উদ্যোগের প্রয়োজন। দ্রুত সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি পুনর্গঠন করে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে সঙ্গীত, নৃত্য, চারু ও কারুকলার শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জোর দাবি জানাই।“
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, “উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি পরিদর্শন করে খুব শিগগিরই তা চালু করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।”