• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩০, ১৭ রজব ১৪৪৬

বঙ্গবন্ধু সেতুতে চলবে না ট্রেন, বছরে আয় কমবে কোটি টাকা


হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম
বঙ্গবন্ধু সেতুতে চলবে না ট্রেন, বছরে আয় কমবে কোটি টাকা
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেল সেতু। ছবি : প্রতিনিধি

উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২৩টি জেলার সঙ্গে রাজধানীর ঢাকা ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগের একমাত্র সংযোগস্থল টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু। এ সেতুটি ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ১৫-১৮ হাজার যানবাহন এবং ৩০-৩৮টি ট্রেন পারাপার হচ্ছে। এটির পূর্ব প্রান্ত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও পশ্চিম প্রান্ত সিরাজগঞ্জের সংযোগস্থল।

২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুটিতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩০-৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে বলে জানা যায়। ফলে ট্রেন যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। এই সমস্যার সমাধানে বিগত সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা একটি রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

এরপর ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই রেল সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। এরপর সেতুর ৩০০ মিটার অদূরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের এই দীর্ঘতম ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ‘যমুনা রেল সেতু’। যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা য়ায়, যমুনা নদীর উপর নির্মিত নতুন এই যমুনা রেল সেতু উদ্বোধনের পর বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল সংযোগ থাকলেও চলবে না কোনো ট্রেন। এতে করে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের বছরে কোটি টাকা আয় কমবে। তবে সেতুতে স্থাপিত রেললাইন অপসারণ করে যান চলাচলের রাস্তা প্রশস্ত করা হবে।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, “সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নতুন রেল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, যা উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এই রেল সেতুটি চালু হলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ফলে বছরে সেতু কর্তৃপক্ষ কোটি টাকা আয় কমবে। তবে, ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে সেতুর উপর চাপ কম থাকবে।”

আহসানুল কবীর পাভেল আরও বলেন, “বর্তমানে সেতুটির ঢাকা ও উত্তরবঙ্গ লেনের প্রস্থ রয়েছে ৬ মিটার, যেখানে সেতুর প্রস্থ কমপক্ষে ৭ দশমিক ০৩ মিটার থাকা প্রয়োজন। রেল লাইন অপসারণ করা হলে এটি ৮ দশমিক ০৫ মিটার হবে। যান চলাচলে রাস্তা প্রশস্ত (লেন) হবে মর্মে সেতু থেকে রেল লাইন অপসারণের জন্য ২০২৩ সালে সেতু মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু দিয়ে সম্প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে একসঙ্গে একজোড়া লোকোমোটিভ ট্রেন পৃথক লাইনে সফলভাবে পরীক্ষামূলক চালানো হয়েছে। চলতি জানুয়ারি শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারিতে সেতুটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন যমুনা রেল সেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এর মেয়াদ ২ বছর বাড়ানোর ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। এরমধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

Link copied!