• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
খুলনা-মোংলা রেললাইন

উদ্বোধনের এক মাসেও চূড়ান্ত হয়নি ট্রেন চলাচলের তারিখ


মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৩, ০৪:৪৭ পিএম
উদ্বোধনের এক মাসেও চূড়ান্ত হয়নি ট্রেন চলাচলের তারিখ
রেললাইনে ফিনিশিংয়ের কাজ করছেন শ্রমিকরা। ছবি : সংবাদ প্রকাশ

চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করে। এরপর ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।  কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। আটটি স্টেশন ও রেলক্রসিংয়ে যুক্ত হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। এ অবস্থায় যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলতে পারছেন না প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই রুটে ট্রেন চালুর অপেক্ষায় রয়েছেন মোংলা ও খুলনার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এই রেলপথে আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হলেও সেখানে এখনো কোনো আসবাবপত্র দেওয়া হয়নি। রেলস্টেশন ও রেলক্রসিংগুলোতে নিযুক্ত করা হয়নি কোনো জনবল। টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের কাজও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। এছাড়া মোট কতটি ট্রেন চলবে, ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়া এখনো নির্ধারণ হয়নি।

খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম জানান, রেললাইনটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী হয়েছে। কিছু ফিনিশিং কাজ বাকি ছিল, এখন সেগুলো করা হচ্ছে। এই রুটে পণ্য পরিবহনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, সেই সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনও চলবে। তবে ট্রেন চলাচল শুরুর তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। আমরা চাই ১ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল করুক। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। রেল মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে অধিদপ্তর সবকিছু নির্ধারণ করবে।”

প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এই রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। ভারতের ঋণ সহায়তায় এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

এই রেলপথে রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণকাজ অনেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি স্থানে আন্ডারপাস (রেললাইনের নিচ দিয়ে যাওয়ার রাস্তা) নির্মাণ করা হয়েছে। আন্ডারপাসের কারণে ট্রেনগুলোকে ক্রসিংয়ে থামতে হবে না। দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকবে না। এই রেলপথের আটটি স্টেশন হলো– ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, দিগরাজ, কাটাখালী, চুলকাঠি, বাঘা ও মোংলা।

মোংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব হাসান বলেন, সবার দাবি দ্রুত ট্রেন চলাচল শুরু হোক। ট্রেন চালু হলে মোংলার সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে মোংলা বন্দর। পর্যটকরাও খুলনা থেকে ট্রেনে সুন্দরবন যেতে পারবেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, “পদ্মা সেতুর পর রেল সংযোগ মোংলা বন্দরের জন্য একটা আশীর্বাদ। এই রেলপথে মোংলার সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের কনটেইনার পরিবহন সহজ হবে। কমলাপুর আইসিডি ও ঢাকা থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য বন্দরে আনা-নেওয়ায় গতি আসবে। বন্দরে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক জাহাজ ভিড়বে।”

Link copied!