বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে কক্সবাজারে। সমুদ্র সৈকতের কোথাও যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। হোটেল-মোটেলগুলোতেও ঠাঁই মিলছে না।
রাজনৈতিক অস্থিরতায় চলতি মৌসুমে হরতাল-অবরোধের কবলে পড়ে পর্যটন শিল্প কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেছেন লাখো পর্যটক। এতে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায়, শীতল সাগর পাড়ে ভিড় করছেন পর্যটকরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন, তার ওপর মহান বিজয় দিবস। অন্য সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে পর্যটকের বাড়তি আগমন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাপ বেড়েছে সৈকতে। আর পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকার ধানমন্ডি থেকে ভ্রমণে আসা এমরান লতিফ বলেন, “আজ সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি। অনেক মানুষ সৈকতে। বেশি মানুষ থাকলে ঈদের মতো আনন্দ লাগে।”
আরেক পর্যটক সাবিনা নূর বলেন, “সাগরটা অনেক শীতল। অনেকক্ষণ গোসল করলাম, তারপর টিউবে গা ভাসালাম। খুবই ভালো লাগছে। কক্সবাজারের প্রতি আমার টান অন্য রকম। এখানে যত আসি ভাল লাগে।”
পর্যটকের চাপে ব্যস্ততা বেড়েছে সৈকতের ওয়াটার বাইক, বিচ বাইক, ঘোড়াওয়ালা ও ফটোগ্রাফারদের। সৈকতে পর্যটকের আগমনে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ দেড় মাস ক্ষতির পর, এবার কিছুটা লাভের আশায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মহাখুশি।
ঘোড়াওয়ালা নবী হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর আজ সৈকতে অনেক পর্যটকের দেখা মিলেছে। সকাল থেকে ২ হাজার টাকা আয় হয়েছে। আগামী কিছুদিন ভালো সময় যাবে বলে মনে হচ্ছে।
পর্যটকদের স্বাগত জানাতে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটন স্পটগুলো সাজানো হয়েছে নতুনভাবে। আকৃষ্ট করা হচ্ছে পর্যটকদের।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতায় বড় ধাক্কা খেয়েছে পর্যটনখাত। এখন ছুটিতে বেশ কিছু পর্যটক কক্সবাজারে আগমন করেছেন। আশা করছি এই কয়েকদিনে কিছুটা ব্যবসা বাণিজ্য হবে। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে প্রায় শতভাগ বুকিং হয়েছে।”
কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাবেদ মাহমুদ বলেন, “চুরি, ছিনতাই ঠেকাতে আমাদের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছি। প্রতিটি মোড়ে আমাদের সদস্যরা সক্রিয় থাকবেন।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে কয়েকদিন পর্যটকের চাপ রয়েছে। সেই লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশের সব ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে। পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আমাদের টিম কাজ করছে।”