আজ নাটোরমুক্ত দিবস


নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আজ নাটোরমুক্ত দিবস

আজ ২১ ডিসেম্বর, নাটোরমুক্ত দিবস। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকা হানাদারমুক্ত হলেও নাটোর মুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর। আজ (শনিবার) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবেন নাটোরবাসী।

দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টায় নাটোর মাদ্রাসা মোড় থেকে একটি বিজয় মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি ফুলবাগান এলাকায় অবস্থিত স্মৃতিসৌধে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও গণকবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

জানা গেছে, নাটোর ছিল পাক হানাদারদের ২ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। এখান থেকেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যুদ্ধ পরিচালনা করতো পাকবাহিনী। ২১ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত পুরো নাটোর ছিল তাদের দখলে।

নাটোরের উত্তরা গণভবন ছাড়াও আনসার হেডকোয়ার্টার, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ, রাণী ভবানী রাজবাড়ি, পিটিআই ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ছিল পাকসেনাদের নিরাপদ ঘাঁটি। মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বড় ধরনের কোনো লড়াই না হলেও একাধিক স্থানে চালানো হয় গণহত্যা।

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পাক হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান, ফতেঙ্গাপাড়া, ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকলপট্টি, মল্লিকহাটি, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, সিংড়ার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরে ব্যাপকভাবে গণহত্যা চালায়।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান পাক হানাদার মুক্ত হলেও নাটোর মুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর। ২১ ডিসেম্বর তৎকালীন গভর্নর হাউস বর্তমান উত্তরা গণভবনে মিত্রবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে পাক সেনা গ্যারিসনের টু আইসি ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফের নেতৃত্বে পাক সেনাবাহিনীর অফিসার, জেসিও এবং মিলিশিয়াসহ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার সৈন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন। সেই সময় নাটোর সেনা গ্যারিসনের কমান্ডেন্ট মেজর জেনারেল নজর হোসেন শাহ ও মিত্রবাহিনীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডেন্ট লে. জেনারেল লছমন সিং।

আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের পর পাকসেনাদের ট্যাংক, কামানসহ প্রায় ১১ হাজার অস্ত্র মিত্রবাহিনীর হস্তগত হয়। আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে ওইদিন বিকেলে আনন্দে বিজয় উল্লাসে রাস্তায় বেরিয়ে আসে সাধারণ মানুষ। উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হন সবাই।

Link copied!