• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাঙ্গাইলে পৌষসংক্রান্তি মেলায় মানুষের ঢল


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪, ১০:৪৬ এএম
টাঙ্গাইলে পৌষসংক্রান্তি মেলায় মানুষের ঢল
পৌষসংক্রান্তি মেলায় মানুষের ঢল। ছবি : প্রতিনিধি

পৌষ মাসের শেষের দিন টাঙ্গাইলের বাসাইলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পৌষসংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষসংক্রান্তি মেলা যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়ে মিলনমেলায় পরিণত হয় চাপড়াবিলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা শত বছরের সিদ্ধেশ্বরী হিজলগাছটির আঙিনা। পৌষ মাসের শেষের দিন বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। বাঙালির সংস্কৃতিতে বারো মাসে তেরো পার্বণের একটি পার্বণ হলো পৌষসংক্রান্তি।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দিনব্যাপী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসুলিয়া সৌন্দর্যের রানি হিজলগাছের আঙিনায় পালিত হয়েছে এ মেলা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করেছেন। মেলায় বাতাসা, দই মিষ্টির দোকান, ভাজা পেয়াজো, চানাচুর, বাদাম, মাটির তৈজসপত্র, বাঁশ বেতের তৈজসপত্র, চটপটির দোকান, শীতবস্ত্রের দোকান বসেছে।

মেলায় ঘুরতে আসা পলাশ সূত্রধর বলেন, “ছোটবেলা থেকে দেখে আসতেছি হিজলগাছের নিচে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগে দাদার সঙ্গে এই মেলায় আসতাম। আজ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এ মেলায় এসেছি। মানত ছিল তা দিয়ে গেলাম ভগবান আশা পূরণ করবেন। তবে জমির আইল ধরে মেলায় আসতে হয়। রাস্তা থাকলে আসতে সুবিধা হয় বৃদ্ধ মানুষ নিয়ে আসা খুব কষ্ট।”

মেলায় ঘুরতে আসা ধীরা মন্ডল বলেন, “এই মেলা যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এ মেলায় আসেন। আমি আমার নাতিকে নিয়ে মেলায় এসেছি। সব বয়সের মানুষ এই মেলায় আসেন। মেলায় এসে কেনাকাটা করেন।”

মিরিকপুর এলাকার দুখিরাম পাল বলেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি উৎসব পৌষসংক্রান্তি। পৌষ মাসের শেষের দিন এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের বাড়িতে বিভিন্ন পিঠা বানিয়ে থাকেন। মেলা উপলক্ষে এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আত্মীয়স্বজন প্রতিটি বাড়িতে ঘুরতে আসেন। যুগ যুগ ধরে হিজলগাছের সামনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হিজলগাছের নিচে পূর্জা-অর্চণা অনুষ্ঠিত হয়। অনেকেই মানত করে বাতাসা-দুধ নিয়ে আসেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এই মেলায় আসেন। তাদের চাহিদামতো কেনাকাটা করেন।”

স্থানীয় জামিল হোসেন বলেন, “এই মেলাটি যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। বাসাইল উপজেলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ এই মেলায় ঘুরতে আসেন। মেলায় আসার জন্য রাস্তার সমস্যা রয়েছে। সবাই জমির আল ধরে মেলায় আসেন।”

বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহেল বলেন, “বাসাইলের বাসুলিয়া হিজল গাছের সামনে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষসংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলাটি যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর পৌষ মাসের শেষের দিন এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনার্থীরা জমির আইল ধরে এই মেলায় আসেন। পরিকল্পনা রয়েছে হিজলগাছের সামনে রাস্তা করে দেওয়ার। সবার সহযোগিতায় রাস্তা করা হবে।”

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, “বাসাইলের বাসুলিয়ায় হিজল গাছের সামনে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে। শুনেছি এই মেলাটি যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে।”

Link copied!