নদীমাতৃক আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার তেলজুড়ী এলাকার কুমার নদে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১২৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণ মেলা। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। এতে ছোট-বড় ১০-১২টি নৌকা বাইচে অংশ নেয়।
সারা বছর এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকেন ওই এলাকাসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ। নৌকাবাইচ দেখতে জেলার ও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার হাজারো মানুষের ঢল নামে কুমার নদের দুই পাড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমার নদে হাজারো মানুষ নৌকা, ট্রলার নিয়ে নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন এই উৎসব। মেলায় মিষ্টির দোকান, ইলিশ মাছের দোকান, খেলনা ও বিভিন্ন খাবারের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে অত্র অঞ্চলের মেয়েদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন আনন্দে।
মিষ্টি ব্যবসায়ী আবুল খায়ের মোল্লা বলেন, “প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে এই নৌকা বাইচের মেলায় মিষ্টি বিক্রি করছি। এবারও মেলায় দোকান দিয়েছি। দোকানে রসগোল্লা, আমৃত্তি, দানাদার, জিলাপিসহ বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রী রয়েছে। বেচাকেনাও বেশ ভালো হচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা কিশোর মাহমুদ বলেন, “জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি নৌকা বাইচ ও মেলা। প্রতি বছর নৌকা বাইচ উপলক্ষে কাছে-দূরের হাজারো মানুষের ঢল নামে। এবারও বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে। এবার ছোট-বড় মিলিয়ে ১০-১২টি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।
নৌকা বাইচ ও মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং শেখর ইউনিয়নের সাবেক (ইউপি) চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়া বলেন, “এ বছর দিয়ে ১২৪তম নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলো। ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই আয়োজন করা হয় প্রতি বছর। জেলা-উপজেলা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলার মানুষ এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে অংশ নেয়। বাইচ শেষে প্রথম ও দ্বিতীয় বিজয়ীদের একটি করে ফ্রিজ, তৃতীয় স্থান অধিকারীকে একটি রঙিন টিভি ও সকল অংশ গ্রহণকারীদের আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হয়।”