বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার ফরিদপুরের তারেকুল ইসলাম। ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া তারেকুল গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে বাবা দেলোয়ার হোসেন ও মা হাসিনা বেগম বুকে জড়িয়ে নেন তাকে। সকলের চোখেই আনন্দ অশ্রু।
তারেকুল দেড় বছর বয়সী একমাত্র কন্যা তানজিহাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করছেন। স্ত্রী নুসরাত জাহান জুথীর চোখে মুখে হাসি। স্বামীকে দেখতে পেয়ে কথা বলতে পারছিলেন না। অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন। তারেকুলের কোল থেকে নামছেই না মেয়ে তানজিহা। বইছে আনন্দের জোয়ার। চলছে নানা আয়োজন। তারেকুলকে দেখতে ভিড় করছেন আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী।
বুধবার (১৫ মে) সকাল ৬টা ১০ মিনিট। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ছকড়িকান্দি গ্রামের নিজ বাড়িতে বড় ভাই হাসানের সঙ্গে এসে পৌঁছালেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার তারেকুল ইসলাম।
তারেকুল বাড়িতে আসায় সকাল থেকেই নানা আয়োজন চলছে। তারেকুলের স্ত্রী আগে থেকেই কেক এনে রেখেছেন, সকলে মিলে কেক কাটলেন, একে অপরকে খাইয়ে দিলেন। রান্না করা হচ্ছে তারেকুলের পছন্দের চিতই পিঠা, মাংস। এছাড়াও গরুর মাংস, শোল মাছসহ নানা পদের রান্না করা হচ্ছে।
তারেকুলের মা হাসিনা বেগম বলেন, “আমরাতো এবার ঈদ করতে পারি নাই। আগেই বলেছিলাম ছেলে যেদিন বাড়িতে আসবে, সেই দিনই আমাদের ঈদ। আজ আমাদের ঈদ।”
তিনি আরও বলেন, “ছেলেকে কাছে পেয়ে কি যে ভালো লাগছে তা বোঝাতে পারবো না। নামাজ পড়েছি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি। ছেলের পছন্দের বিভিন্ন খাবার রান্না করছি। আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীরা আসছে সকলেই খুবই খুশি।”
তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “নামাজ পরে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি। ছেলে সুস্থভাবে বাড়িতে আসায় খুবই খুশি। যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জাহাজ কোম্পানি সহ দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
তারেকুল ইসলাম বলেন, “জীবনের ওই কটা দিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এখন অনেক ভালো লাগছে। ভেবেছিলাম হয়তো আর কোনোদিন কারো সাথে দেখা হবে না। আল্লাহর রহমতে বাবা মায়ের দোয়ায় সুস্থভাবে ফিরে এসেছি। আমাদের উদ্ধারে যারা এগিয়ে এসেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ”
তারেকুলের স্ত্রী নুসরাত জাহান জুথী বলেন, “অনেক খুশি, ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তারেকুলের জন্য বিশেষ আয়োজন রয়েছে। আজকের দিনটি আমাদের ঈদের দিন।”