• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্কুলে যাওয়ার রাস্তা নেই, যেতে হয় পানি মাড়িয়ে


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৩, ০৫:৩৫ পিএম
স্কুলে যাওয়ার রাস্তা নেই, যেতে হয় পানি মাড়িয়ে

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে রাস্তা না থাকায় পানি মাড়িয়ে উড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় খেলাধুলার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের উড়িয়াবাড়ী গ্রামের প্রায় একশ মিটার ভেতরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ফসলি জমির আইল পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয় কোমলমতি শিশুদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত আইল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এক প্রকার ঝুঁকি নিয়ে হাটু পানি ভেঙে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা। কারও কারও জামা-কাপড় ও বই-খাতা ভিজে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলে, বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই বই, খাতা ও পরণের পোশাক ভিজে যায় । তাই দ্রুত বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তাসহ মাঠ নির্মাণের দাবি জানায় সুমাইয়া।

চতুর্থ শ্রেণির বর্ণা খাতুন বলে, “একটু বৃষ্টি হলে ক্ষেতের আইল ডুবে যায়। ছেলেরা কষ্ট করে যাতায়াত করতে পারলেও আমাদের খুব সমস্যা হয়। মাঝেমধ্যেই পড়ে গিয়ে বই-খাতাসহ পোশাক ভিজে যায়।”

ইউসুফ আলী নামের এক অভিভাবক বলেন, “আমার দুই মেয়ে এই স্কুলে পড়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ক্ষেতের আইলে পানি উঠে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই কাজ বাদ দিয়ে মেয়েদের স্কুলে রেখে আসতে হয়। এ ছাড়া মাঠ না থাকায় ছোট ছোট শিশুদের মধ্যে স্কুলে আসা নিয়ে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাই দ্রুত রাস্তা ও খেলার মাঠ তৈরির দাবি জানাচ্ছি।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, “বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যালয়ে আসতে প্রতিদিনই ছাত্র-ছাত্রীদের বই খাতা ভিজে যায়। এতে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। তাছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় ভালো করতে পারছে না।”

তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক বরাদ্দ হয়েছিল। রাস্তা না থাকায় অতিরিক্ত খরচে মালামাল বহন করে কাজ করতে ঠিকাদার রাজি হননি “

বিদ্যালয়ের সভাপতি ও দাতা সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান রতন বলেন, তিনদিকে বাড়ি ও একদিকে বড় সড়ক থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। তাই বৃষ্টি হলে দ্রুত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

হেমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান তালুকদার হীরা বলেন, “বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ এসেছিল। কিন্তু জমির মালিকরা রাস্তা নির্মাণে আপত্তি জানালে বরাদ্দ ফেরত যায়। বিদ্যালয়ের রাস্তা ও মাঠ নির্মাণে পুনরায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীগগিরই সমস্যার সমাধান করা হবে।”

এ ব্যাপারে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসফিয়া সিরাত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি ইতোমধ্যে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। জমি নিয়ে অতীতে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, দ্রুতই জমির মালিকদের নিয়ে বসে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করে যাতায়াতের পথ সুগম করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠ থাকা অত্যন্ত জরুরি। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে। বিদ্যালয়ে খেলাধুলার উপযোগী মাঠ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

Link copied!