• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া সেই তরুণের লাশ উদ্ধার হলো যেভাবে


শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া সেই তরুণের লাশ উদ্ধার হলো যেভাবে
সুমন মিয়া

বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় অপহরণের শিকার শেরপুরের সেই কলেজছাত্র সুমন মিয়ার (১৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে শহরের সজবরখিলা মহল্লার ফুরকান মিয়ার বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

নিখোঁজের ৭ দিন পর ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার রাত দেড়টায় নিজ প্রেমিকা আন্নির অপর প্রেমিক রবিনের বাড়ির উঠান থেকে মাটিচাপা অবস্থায় সুমন মিয়ার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত সুমন শহরের কসবা বারাকপাড়া (নিমতলা) এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলামের ছেলে এবং শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ জানায়, পরিবারের করা অভিযোগে জানা যায় ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় সুমন মিয়া কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় আন্নির উপস্থিতিতে আরও ২-৩ জন যুবক জোরপূর্বক সুমনকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সুমনের বাবা। গত কয়েক দিনেও সুমনের সন্ধান না পেয়ে তার মা-বাবা, স্থানীয় এলাকাবাসী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থী রোববার দুপুরে পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সুমনকে উদ্ধারসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

অভিযোগের পর ১০ নভেম্বর রোববার রাতে শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকা থেকে আন্নির পিতা শিক্ষক মো. আজিম উদ্দিন ও আন্নি আক্তারকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছেন। তবে অপহরণের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ থেকে আন্নির অপর প্রেমিক রবিন ওরফে রনিকে আটক করলে ঘটনার জট খুলে। পরে পৌর শহরের সজবরখিলায় পুলিশ সদস্য ফোরকান আলীর ছেলে রবিনের বাড়ির উঠানে তার দেখানো জায়গা থেকে সুমন মিয়ার লাশ উদ্ধার করে। এমন খবরে ঘনবসতিপূর্ণ সজবরখিলা এলাকার মানুষ হতবাক হয়ে যায়।

শেরপুর শহরের সজবরখিলের একটি বাড়ির উঠানে মাটিচাপা অবস্থায় কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সুমন ও আন্নির মাঝে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং আন্নি সুমনকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। একাধিক প্রেমে আসক্ত আন্নি রবিনেরও সঙ্গে প্রেমের সম্পকে জড়ায়। এ নিয়েই অঘটন ঘটে থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।

লাশ উদ্ধারের পর রাতেই মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত সুমনের স্বজনরা আন্নি, রবিনসহ জড়িত সব অপরাধির ফাঁসি দাবি করেন। 
এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের ফোনের  সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহ থেকে ঘাতক রবিনকে আটক করে তার দেখানো জায়গা থেকে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। 

Link copied!