মোংলা-খুলনা রুটে ১ জানুয়ারি থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরুর কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। ফলে মোংলাবাসীর স্বপ্নের ট্রেনের অপেক্ষার পালা আপাতত শেষ হয়েও যেন হলো না শেষ।
খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত থাকলেও আপাতত শুরু হচ্ছে না।
তবে কবে নাগাদ ট্রেন চলবে তার নির্দিষ্ট দিনক্ষণও বলতে পারেননি তিনি। এর জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যথাসময়ে কাজ বুঝিয়ে দিতে না পারাকে দায়ী করেছেন।
প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এই রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো ও ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
ভারতের ঋণ সহায়তায় শুরু হওয়া এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। এই রেলপথে রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণকাজ অনেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি স্থানে আন্ডারপাস (রেললাইনের নিচ দিয়ে যাওয়ার রাস্তা) নির্মাণ করা হয়েছে। আন্ডারপাসের কারণে ট্রেনগুলোকে ক্রসিংয়ে থামতে হবে না। দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকবে না।
এই রেলপথের আটটি স্টেশন হলো– ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, দিগরাজ, কাটাখালী, চুলকাঠি, বাঘা ও মোংলা।
চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করে। এরপর ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
মোংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব হাসান বলেন, সবার দাবি দ্রুত ট্রেন চলাচল শুরু হোক। ট্রেন চালু হলে মোংলার সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে মোংলা বন্দর। পর্যটকরাও খুলনা থেকে ট্রেনে সুন্দরবন যেতে পারবেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, “পদ্মা সেতুর পর রেল সংযোগ মোংলা বন্দরের জন্য একটা আশীর্বাদ। এই রেলপথে মোংলার সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের কনটেইনার পরিবহন সহজ হবে। কমলাপুর আইসিডি ও ঢাকা থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য বন্দরে আনা-নেওয়ায় গতি আসবে। বন্দরে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক জাহাজ ভিড়বে।