উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে লালমনিরহাটে স্বল্প মেয়াদি বন্যা দেখা দেয়। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এদিকে বন্যার পানি নেমে গেলেও কমেনি দুর্ভোগ। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার হাতিবান্ধা, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় তিস্তা ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই পয়েন্ট রোববার বিকেল ৩টায় পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে ওই পয়েন্টে রোববার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কমতে শুরু করে।
এদিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী,
কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্ধন, বাহাদুরপাড়া, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ,কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। ডুবে যায় চলাচলের রাস্তা।
সরেজমিন বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা থেকে এখনো পানি সরেনি। এখনো নিম্নাঞ্চলের কিছু বাড়িঘরের মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। এখনো তলিয়ে আছে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। কিছু বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও ঘরে বাইরে কাদা জমায় চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের। বিশুদ্ধ পানির সংকট হওয়ায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। পানি কমে যাওয়ায় বেড়েছে নদী ভাঙ্গন। তিস্তার প্রবল স্রোতে আবাদি জমি, বসতভিটা, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। জিও ব্যাক ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা জেলার ৫ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।