সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে জেলায় মঙ্গল ও বুধবার কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। বুধবার (৫ জুলাই) একই সময়ে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
মূলত ভারী বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পানি কমছে। একই সঙ্গে উজানের পাহাড়ি ঢলও নেমেছে কম। বুধবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৬৫ মিটার।
ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার সুরমা, যাদুকাটা, বৌলাই, নলজুর, কুশিয়ারা, কালনী, পাটলাই, চলতি, রক্তিসহ সব নদ–নদীর পানিই কমছে। একইভাবে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে যেসব গ্রামীণ রাস্তা প্লাবিত হয়েছিল, সেসব রাস্তা থেকেও পানি নামছে।
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার সদর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়। এতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অনেকের মধ্যে গত বছরের মতো ভয়াবহ বন্যা হবে কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। তবে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকেনি। গত দুদিন বৃষ্টি না হওয়া এবং পানি কমায় মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জেলা শহরের বাসিন্দা আহমেদ জামিল জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চলসহ সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কিছু কিছু এলাকায় পানি ঢুকে যায়। এতে পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন এখানকার বাসিন্দারা। গত দুদিন বৃষ্টি না হওয়ায় এরই মধ্যে শহরের নিচু এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক লোকমান মিয়া বলেন, “আমরা হাওর পাড়ের মানুষ। প্রতি বছর বন্যায় আমাদের ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট ডুবে যায়। যার ফলে এখানকার মানুষকে চরম দুর্ভোগের পড়তে হয়। বর্ষায় নৌকাই আমাদের একমাত্র ভরসা।”
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা জানান, পানি বাড়ার কারণে হাওর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। গত দুদিন বৃষ্টি না হওয়ায় এখন পানি কমায় সবাই স্বস্তিতে আছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় রাস্তাঘাট ভেসে উঠছে।