“কোনো কিছু দেখাদেখি নায়। যেলা মন চাহেচে সেলায় সবকিছুর দাম বারে যাচে। হামা কিনিবা পারি আর না পারি। হামরা খায় আর না খায় দাম বাড়িবেই। আইজ তেলের দাম, কাইল চিনির দাম, এলা ফের বয়লার, ডিম সব জিনিসলার দাম আগুন। এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম লাগিচে ৩০০ টাকা। আর হামার যে ওই মজুরি ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ হইচে আর বাড়ে না। যদি কহি একটু বাড়ায় দেন, তাহলে আর হামাক কামত লিবেনি৷ কাথা হইল সবকিছুর যে দাম বাড়িল হামার দাম কত দিনে বাড়িবে কহেন দি?”
শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার জগ্ননাথপুর থেকে আসা দিনমজুর ধীরেন্দ্র নাথ (৪২)।
প্রতিদিন সকালে কাজের খোঁজে সাইকেল নিয়ে কয়েকজন সহযোগীসহ জেলার চৌরাস্তায় অবস্থান করেন তারা। সেখান থেকে মানুষের চাহিদামতো দৈনিক হাজিরা অনুযায়ী বিভিন্ন কাজে যান তারা।
ধীরেন্দ্র নাথ আরও বলেন, “এইলা কষ্টের কাথা কাক কহিবেন৷ কেউ শুনিবেনি হামার গরিবের কষ্ট। হামরা যে কীভাবে চলি হামরাই ভালো জানি। এলা হামার দাম বাড়ায় দোক, না হইলে জিনিসপত্রের দাম কমায় দোক। চলিতে থাকিলে এমন করে কিছুদিন পর না খাইয়া থাকিবা হবে। আর কোনো হামার উপায় থাকিবে নি।”
আরেক দিনমজুর প্রফুল্ল রায় বলেন, “১০০ টাকা বেশি চাহিলে আর হামাক কামত নিবা চাহে না। কহে মুখের ওপর টাকা কি চাহিল মিলে। সেই কারণে অপমানের ভয়ত আর বেশি চাহাও যায় না। যদি হামার মজুরিডা না বাড়ে তাহলে আরও কষ্ট হবে। এলা খরচপাতি আর ওষুধ কিনেতে খুবে কষ্টে হচে হামার।”
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী বলেন, “নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক দাম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভোক্তাদের স্বার্থে আমরা নিয়মিত বাজার তদারকির অভিযান পরিচালনা করছি। এরপরেও কোনো অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”