রাজশাহীর দুর্গাপুরে পরকীয়ায় ‘মা’ অন্যের সঙ্গে চলে যাওয়ায় বাবাকে বিয়ে দিয়েছেন স্কুল পড়ুয়া সন্তানেরা।
সন্তানের চোখে বাবাই হচ্ছে সবচেয়ে কাছের পৃথিবী। সেই শৈশবে বাবার আঙ্গুল ধরে শুরু হয় পথচলা, কৈশোরের দুরন্তপনার সঙ্গী, যৌবনে সাহসের জোগানদার আর সংসার জীবনে একজন দায়িত্ববাান পুরুষের ভূমিকা। একজন আদর্শবান বাবার চোখেই তার সন্তান দেখতে শেখে পৃথিবীর আলো আর অন্ধকারের মতো মানুষের জীবনের সুখ–দুঃখের ক্ষণস্থায়ী বিচরণ। এবার বাবার দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তান ধুমধামের মাধ্যমে বিয়ে দিলেন বাবার।
দুর্গাপুরে দুই স্কুলছাত্র শিশু সন্তানকে রেখে মা অন্য পুরুষের সঙ্গে পরকীয়া করে চলে গিয়ে বিয়ে করে সংসার করছেন। এতে সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে বাবা শুধুই চোখের পানি ফেলতেন এবং দুঃচিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে চতুর্থ শ্রেণিতে ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ছেলে তাদের বাবার বিয়ে দিলেন ব্যাপক ধুমধামের মাধ্যমে।
সন্তানেরা বলে, “আমাদের বাবা, আমাদের পৃথিবী। আর পৃথিবীর মুখ অন্ধকার থাকলে, আমাদের জীবনও অন্ধকার হয়ে যাব। তাই বাবার বিয়ে দিয়ে নতুন মা নিয়ে এসেছি।”
স্থানীয়রা জানান, জেলার দুর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুশাডাঙ্গা গ্রামের আ. রহিম উদ্দিনের ছেলে খায়রুল ইসলাম বিয়ে করেছিলেন একই উপজেলার ৭নং জয়নগর ইউনিয়নের নুনামাটিয়াল গ্রামের মো. মিস্টার আলীর মেয়ে মোছা. মিরা খাতুনের সঙ্গে প্রায় একযুগ আগে বিয়ে হয়। খায়রুল ও মিরা তাদের সংসার ভালোই চলছিল। তাদের সংসারে দুইটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। প্রথম সন্তান মোহাম্মদ মিঠুন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে ও দ্বিতীয় সন্তান মো. এয়ামিন প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
এরমধ্যে মিরা বেগম একসময়ে অমিত হাসান নামের যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং প্রায় দুই মাস আগে মিরা তার স্বামী সন্তান ও সংসার রেখে একই অমিত হাসানের বাড়িতে চলে গিয়ে অমিতকে বিয়ে করেন।
পরকীয়ায় মা অন্যের সঙ্গে চলে যাওয়ায় সন্তানেরা বাবার সঙ্গে জেদ ধরে ‘আমাদের তুন মা এনে দাও।’ তাদের বাবাকে নতুন করে বিয়ের জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে। একসময়ে পরিবারের সবার সঙ্গে পরামর্শে বিয়ের জন্য রাজি হয় বাবা খায়রুল।
শুরু হয় পাাত্রি দেখা কাজ, একপর্যায়ে গত বুধবার উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুর গ্রামের মৃত বাদলের মেয়ে মোছা. মৌসুমির সঙ্গে বিয়ে হয়।