• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

বিদেশ যেতে নিজের হাত-পা বাঁধা ছবি স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে অপহরণের নাটক, অতঃপর…


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম
বিদেশ যেতে নিজের হাত-পা বাঁধা ছবি স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে অপহরণের নাটক, অতঃপর…

নিজের হাত-পা বাঁধা ছবি স্ত্রীর মোবাইলে পাঠিয়ে অপহরণের কথা বলে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছেন মোহাম্মদ ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তি। টাকা না দিলে অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করবেন বলে স্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ইদ্রিসকে চট্টগ্রাম নগরের মোহরার বালুর টাল এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি মৌলভীপাড়া এলাকায়। রাতে তাকে পেকুয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে পেকুয়ার টৈটং বাজার থেকে আত্মগোপনে চলে যান ইদ্রিস। এরপর তার স্ত্রীকে ফোন করে অপহৃত হওয়ার কথা জানান। স্ত্রীকে বলেন, ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। নইলে অপহরণকারীরা তাকে মেরে ফেলবে। পরে পরিবারের সদস্যরা মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়।

পুলিশ প্রথমে ইদ্রিসের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান ধরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। তবে ইদ্রিসের সন্ধান না পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ইদ্রিসের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে—এমন একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন। ওই ব্যক্তি তার স্ত্রীর ছোট বোনের স্বামী নবী হোছেন। নবী হোছেনকে চট্টগ্রাম নগর থেকে আটকের পরে তার সহায়তায় ইদ্রিসের সন্ধান পায় পুলিশ। অপহরণ নাটকের বিষয়টি নবী হোছেনকে আগেই জানিয়েছিলেন ইদ্রিস।

গতকাল রাত ১০টার দিকে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফার কক্ষে ইদ্রিসের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তার তিন লাখ টাকার মতো ঋণ রয়েছে। এই টাকা পরিশোধ করার প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া বেশি টাকা আদায় করতে পারলে তা দিয়ে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।”

ইদ্রিস বলেন, “দোকান থেকে রশি কিনে অন্য একজনের সহায়তায় নিজের হাত-পা বেঁধে ছবিটি স্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। ঘটনাটি এত বড় হবে ভাবিনি। এখন আমি অনুতপ্ত।”

স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আট মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে কর্মহীন হয়ে পড়েন ইদ্র্রিস। এরপর ধারকর্জ করে তার সংসার চলছিল। ঋণ বেড়ে যাওয়ায় পাওনাদাররা তাকে চাপ প্রয়োগ করছিলেন। তাই ঋণের টাকা পরিশোধ করে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে অপহরণের নাটক সাজিয়ে স্ত্রীকে ইদ্রিস বলেন ভাইদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মুক্তিপণ পরিশোধের জন্য।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, “ইদ্রিসকে বুধবার দুপুরে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে। তার বিষয়ে আদালত যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!