• ঢাকা
  • রবিবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘সেই তরুণীকে হত্যায় ৮টি গুলি করা হয়’


মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৪, ০৮:৫৫ এএম
‘সেই তরুণীকে হত্যায় ৮টি গুলি করা হয়’

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে নিথর পড়ে থাকা তরুণীর নাম সাহিদা আক্তার। ২৪ বছর বয়সী এই তরুণীর বাড়ি ময়মনসিংহ নগরীতে। মা ও ভাইয়ের সঙ্গে রাজধানীর ওয়ারীর ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ফিরোজ কবির সাংবাদিকদের জানান, সাহিদা বেগম নামের ওই তরুণী রাজধানীর ওয়ারীতে তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি একটি ডে-কেয়ারে কাজ করতেন।

পুলিশ বলছে, শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে ওয়ারীর বাসা থেকে বের হন সাহিদা। অনেক দিন ধরে ওয়ারীর একটি বাসায় শিশু দেখাশোনার কাজ করতেন। পরিবারের লোকজনকে সাহিদা বলেছিলেন, যে বাসায় কাজ করেন, শুক্রবার রাতে সেখানেই থাকবেন।

জ্যাকেট পরিহিত ওই তরুণীর শরীরে আটটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। শরীরের সামনের অংশে ছয়টি ও পেছনের দিকে দুটি গুলি করা হয়েছে। ভোর ৫ থেকে ৬টার দিকে তরুণীকে গুলি করা হতে পারে। তার লাশের পাশে মিলেছে গুলির পাঁচটি খোসা।

পুলিশের ধারণা, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তৌহিদ নামের এক যুবক জড়িত থাকতে পারে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তৌহিদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।

শনিবার সকালে লাশ উদ্ধারের প্রায় ছয় ঘণ্টা পর তরুণীর কাছে পাওয়া আইফোনের সূত্র ধরে পরিচয় শনাক্ত হয়।

সাহিদার পরিবারের তথ্যের বরাত দিয়ে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “তৌহিদের সঙ্গে সাহিদার প্রেম ছিল। মাস তিনেক আগেও তারা লঞ্চে চাঁদপুর গেছেন। সেখানে দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয়। সেটি শেষ পর্যন্ত থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। পরিবারের সদস্যরা ওই যুবকের দিকে আঙুল তোলায় পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।”  

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তরুণীর লাশ এক্সপ্রেসওয়েতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর আইফোন থেকে সিম কার্ড খুলে পরিবারের সদস্যদের ফোন করলে বিষয়টি খোলাসা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে ওই তরুণীকে এক যুবকের সঙ্গে মহাসড়কে হাঁটতে দেখা গেছে। এর এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর তরুণীর গুলিবিদ্ধ লাশ মহাসড়কে পড়ে থাকতে দেখতে পান পথচারীরা। তরুণীর সঙ্গে থাকা ওই যুবককে স্থানীয়রা চিনতে পারেননি। তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না, তা-ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তরুণীর ভাই মো. জসিম জানান, তারা তিন বোন ও দুই ভাই। বছর পাঁচেক আগে সাহিদার বিয়ে হয়েছিল। পরে জানা যায়, তার স্বামী আগেই আরেকটি বিয়ে করেছেন। এরপর বছর না ঘুরতেই তাদের বিচ্ছেদ হয়।

সাহিদার মা জরিনা খাতুন বলেন, “ওয়ারী এলাকার তৌহিদ নামের এক ছেলে আমার মেয়েকে বিরক্ত করত। কিছুদিন আগে সে আমার মেয়েকে চাঁদপুর নিয়ে যায়। সেখানে এলাকাবাসী তাদের আটক করে। আমরা বিয়ে দিতে চাইলেও ছেলেটির পরিবারের লোকজন রাজি হয়নি। উল্টো তৌহিদের মা তার ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ের শর্ত হিসেবে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। তৌহিদ আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসি চাই।”

Link copied!