ফেনীতে প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত সমন্বয়ক ওমর ফারুক শুভকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে আজিজুর রহমান রিজভীর পক্ষে তার বাবা ছিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে ওমর ফারুক শুভকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটক ওমর ফারুক শুভ ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের জগতজীবনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। গত আগস্টে আন্দোলনে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকায় তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলার সহ-সমন্বয়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপরও বিগত কয়েক মাস ধরে জেলার অন্য সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়েই শুভকে বিভিন্ন কর্মসূচি ও সভা—সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে থানায় অভিযোগকারী আজিজুর রহমান রিজভী বলেন, “কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, তথ্য উপদেষ্টা ও আমার নাম ভাঙিয়ে তিনি (শুভ) চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করেছে। ন্যূনতম যোগাযোগ ও সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তার এমন কাণ্ড আমার জন্য সম্মানহানিকর। বিষয়টি অবগত হয়ে আমি ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ করেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি আশীর্বাদস্বরূপ। এসব নামে—বেনামে সমন্বয়কদের কারণে এ ব্যানারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।”
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, “মামলা করার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে আটক করেছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে শুভকে কারাগারে পাঠানো হবে।”
এর আগে নানা কেলেঙ্কারির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত ফেনী আলিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে স্বপদে বহাল রাখার আশ্বাস দিয়ে চাঁদা দাবি করেন শুভ। মঙ্গলবার চাঁদা দাবির ১৫ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকে জেলাজুড়ে নানা আলোচনা—সমালোচনা শুরু হয়।
ভাইরাল ওই কল রেকর্ডে শোনা যায়, ওমর ফারুক শুভ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের ও হামজা মাহবুবের কথা বলে অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। যেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফেনীর সন্তান আজিজুর রহমান রিজভীর নাম উল্লেখ করেন তিনি।