যে কারণে বেনজীরের ডুপ্লেক্স বাড়িতে ঢুকতে পারেননি প্রশাসনের কর্মকর্তারা


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
যে কারণে বেনজীরের ডুপ্লেক্স বাড়িতে ঢুকতে পারেননি প্রশাসনের কর্মকর্তারা
বাড়ি নয় যেন রাজপ্রাসাদ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের নারায়ণগঞ্জের আনন্দ হাউজিংয়ে থাকা ডুপ্লেক্স বাড়িটি দখলে নিয়েছে প্রশাসন। শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে বাড়িটি জব্দ করা হয়।

এসময় নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুল আলম, দুদকের উপপরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান মাহমুদ রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে বাড়িটি জব্দ করতে গিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি কেউ।  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিকুল আলম বলেন, বেনজীর আহমেদের মেয়ের নামের সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে রক্ষণাবেক্ষণ করার আদেশ দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে সম্পত্তিটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

দুদকের আঞ্চলিক পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী বলেন, “বাড়িটি অত্যাধুনিক তালাবদ্ধ থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি। তবে একটি কমিটি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোরশেদ আলমের হেফাজতে আগামী ৩ দিনের জন্য রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এর ভেতরে থাকা মালামালসহ সবকিছু জব্দ তালিকা করব।”

মঈনুল হাসান আরও জানান, দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ জুন আদালত তৃতীয় দফায় বেনজীরের আরও বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করা হয়। সে তালিকায় এ বাংলোটিও রয়েছে।

জানা গেছে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশের নানাস্থানে অবৈধ স্থাপনা গড়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দক্ষিণবাগ চোরাবো মোড়ের ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেন বেনজীর। আনন্দ হাউজিং নামে পুলিশ কর্মকর্তাদের গড়া আবাসন কোম্পানির ২৪ কাঠা জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি। যেখানে সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বেনজীর এ বাড়িতে যেদিন এবং যতক্ষণ অবস্থান করতেন ততক্ষণ বন্ধ রাখা হতো এখানকার রাস্তা। পুলিশ পাহারায় এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হতো সেখানে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে এলাকার প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের কাছ থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৫৫ শতাংশ জায়গা কেনেন বেনজীর। পরে ২০১৯ সালের দিকে এই আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন। তবে তার এই বাড়ি ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা গল্প, রহস্য।

অভিযোগ রয়েছে, বেনজীরের অবৈধ সম্পদের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এই বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ ভেতরে থাকা মালামাল সরিয়ে ফেলেছেন। প্রায় সময়ই পুলিশের সাইরেন বাজিয়ে গাড়ির বহর নিয়ে বাড়িতে আসতেন বেনজীর। পুলিশের নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে তখন বাড়ির পাশের সড়ক দিয়ে লোকজনের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হতো। 

বেনজীরের সঙ্গে মাঝেমধ্যে আসতেন চেনা-অচেনা সংগীতশিল্পী ও নাটক-সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তখন বাড়িতে গানের আসর বসত। গানের উচ্চ শব্দে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটত স্থানীয়দের। তবুও ভয়ে কখনো কেউ মুখ খুলতেন না।

Link copied!