• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পেঁয়াজবীজ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
পেঁয়াজবীজ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা
ফসলি মাঠ। ছবি : প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের ফসলি মাঠজুড়ে একসময় আবাদ হত গম, ভুট্টা, আলু ও সরিষা। বিস্তৃত মাঠজুড়ে দেখা যেত এসব ফসলের আবাদ। বর্তমানে কৃষিপ্রযুক্তির উন্নয়নে নানা ধরনের ফসল আবাদ করছেন জেলার চাষিরা। ইতোমধ্যে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নে পেঁয়াজবীজ উৎপাদন।

জেলার বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের পতিলাভাসা প্রাম। গ্রামের ফসলি মাঠে চারপাশে এখন সাদা রঙের পেঁয়াজফুলের সমাহার। একটা সময় কৃষকেরা আলাদা ফসল চাষাবাদ করলেও এখন উৎপাদন করেন পেঁয়াজবীজ। গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এবারের মৌসুমে ভালো বীজ পেতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খেতে সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ সেচ দিতে, কেউ আবার পোকা দমনের কীটনাশক স্প্রে নিয়ে, কেউ হাতের আলতো ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতি বছরে নভেম্বর মাস পেঁয়াজবীজ বপনের মুখ্য সময়। বীজ পরিপক্ব হতে সময় লাগে ১৩০-১৫০ দিন। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজফুলে পরিপক্বতা আসে না। আর এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা খেতে কীটনাশক ছেটান। কিন্তু সেই কীটনাশকে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। এ কারণে পেঁয়াজবীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই  হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়ন করেন চাষিরা।

জেলায় চলতি মৌসুমে ১১২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজবীজ আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হেক্টর কম। প্রতি হেক্টরে ৯০০ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৩ কোটি টাকা।

পেঁয়াজবীজ ক্ষেতে সেচ প্রদান, কৃত্রিমভাবে পরাগায়ন ও কীটনাশক ছিটানোর কাজ করেন শ্রমিকরা। পারিশ্রমিকের আয়ের সংসার চলে তাদের।

চাড়োল ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল বারেক বিজয় বলেন, “প্রতি বিঘা জমিতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করে বিক্রি করা যায় প্রায় দুই লাখ টাকার বীজ। এতে করে স্বল্প সময়ে ভালো দাম পাওয়ায় আমাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে। তবে বীজের ন্যায্য দাম পেতে কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আরও লাভবান হতে পারব।”

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ভালো দাম পাওয়ায় পেঁয়াজবীজ উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন জেলা কৃষকরা। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।”

Link copied!