পাবনার আটঘরিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে শেষ হলো ১০ দিনব্যাপী গ্রামবাংলার ঐহিত্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে প্রতিবারের মতো এবারও উপজেলার গোড়রী গ্রামের চিকনাই নদীতে ১১ সেপ্টেম্বর এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে অংশ নেয় চারটি দল। এতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে আটঘরিয়ার চান্দাই জনতা এক্সপ্রেস।
এ ছাড়া ফরিদপুরের নিউ শেরে বাংলা দ্বিতীয় স্থান, একই এলাকার হাদল দুরন্ত এক্সপ্রেস তৃতীয় এবং মৌদ স্বাধীন বাংলা চতুর্থ স্থান অধিকার করে। পরে অতিথিরা সব দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। প্রতিটি দলকে পুরস্কার হিসেবে গরু দেওয়া হয়।
চ্যাম্পিয়ন দলকে দেড় লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দলকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু, তৃতীয় স্থান অধিকারী দলকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু এবং চতুর্থ স্থান অধিকারী দলকে এক লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে একটি করে এলইডি টিভি দেওয়া হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। আটঘরিয়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান মিন্টু, পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি, যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, ভাড়ারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান।
স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও রুচির সৌজন্যে এ বছরের প্রতিযোগিতায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ১০টি নৌকাবাইচ দল অংশ নেয়।
নৌকাবাইচ দেখতে নদীর দুই পাড়ে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটে। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ঘিরে আশপাশের গ্রামগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। বিভিন্ন বাড়িতে মেয়ে জামাই নিয়ে আসা হয়। আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজক আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রতিবছর এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সবার সহযোগিতায় আগামীতেও এই আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকবে।