উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি আবারও বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীপারের বাসিন্দারা। এ ছাড়া দ্বিতীয় দফায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সকাল ৯টায় তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, “সকাল ৬টায় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।”
তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
চর সিন্দুর্নার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন বলেন, “তিস্তা নদীর পানি রাত থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। চলাচলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।”
সিন্দুর্না ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, “তিস্তায় গত চার দিন কোনো পানি ছিল না, হঠাৎ রাত থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, “প্রথম দফায় বন্যার পর দ্বিতীয় দফায় গড্ডিমারির পাঁচটি ওয়ার্ডের ঘরবাড়িতে আবারও পানি প্রবেশ করছে। এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তিস্তাপারের লোকজনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।”
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে জেলার ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। জরুরি প্রয়োজনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”