টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে দেশের ১২ জেলা। তবে তিস্তায় পানি বাড়লেও আপাতত বন্যার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। একই সঙ্গে তিস্তা পাড়ের মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে, তিস্তায় পানি বাড়তে থাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। গত দুই দিনে তিস্তা নদীর ডান তীর লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়া গাছ ইউনিয়নের হরিনচড়া, গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গেকুন্ডা গ্রামে নদীভাঙন দেখা দেয়। গত দুই দিনে তিনশ বিঘা ফসলি জমি দশ থেকে পনেরটি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবার। একদিকে তিস্তা পাড়ে ভাঙন অন্য দিকে বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা।
চর গোকুন্ডা এলাকার ছকমল উদ্দিন বলেন, “কয়েক দিন থেকে নদীতে পানি বাড়ছেই। এবার পানির অনেক স্রোত, এতে চর গোকুন্ডার অনেক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে আমরা বন্যা আর ভাঙন আতঙ্কে রয়েছি।”
হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী এলাকার ফারক হেসেন বলেন, “প্রতি বছর ভাঙন কবলে পরে হাজার হাজর পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। আমাদের ত্রাণ দরকার নেই তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হলে পাড়ের লোকজন স্থায়ীভাবে নিরাপদে বসবাস করতে পারবে।”
গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ সরকার টোটন জানান, তিস্তা নদীতে তেমন বন্যা না হলেও অতিরিক্ত স্রোতের কারণে ৮নং ওয়ার্ডে চর গোকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। চোখের সামনে গ্রামের একের পর এক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকলেও কিছুই করা যচ্ছে না।”
লালমনিরহাটের পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, তিস্তায় বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পানির স্রোত বেশি থাকায় কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।