পরীক্ষা চলাকালীন অসদুপায় অবলম্বন করছিল সাইফুল আমিন নামের এক শিক্ষার্থী। সেই কাজে বাঁধা দেওয়ায় পরীক্ষা হলেই দায়িত্বরত বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমানের দুই গালে চড় মারে সাইফুল। এরপর সে সেখান থেকে বেড়িয়ে যায়। এই ঘটনার পুরো সিসিটিভির ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে পড়েছে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সাইফুল আমিন ‘দৈনিক মাথাভাঙ্গা’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সরদার আল-আমিনের ছেলে।
রোববার (৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাতেই সদর থানায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান।
অভিযোগপত্রে প্রধান শিক্ষক বলেন, “বিদ্যালয়ের ১১২ নম্বর কক্ষে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান। পরীক্ষা চলাকালীন এ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার দশম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ (সিরিয়াল নম্বর ২৮, স্টুডেন্ট আইডি নম্বর ২১৮৫৫৯ ) পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এমতবস্থায় দায়িত্বরত শিক্ষক বাঁধা প্রদান করায় ওই শিক্ষার্থী শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পরীক্ষার্থী সাইফুল আমিন পরীক্ষা দেওয়ার সময় অসদুপায় অবলন্বন করলে তার খাতাটি দায়িত্বরত শিক্ষক কেড়ে নেয়। এরপর তাকে শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। সে সময় শিক্ষক তাকে দুই কাঁধ চাপ দিয় তার আসনে বসিয়ে দেয়। এরপর ওই শিক্ষার্থী নিজের আসন থেকে উঠে গিয়ে পেছনে হাত রেখে ওই শিক্ষকের মুখোমুখি দাঁড়ায়। এসময় কথা বলার পরপরই সে শিক্ষকের দুই গালে চড় মেরে পালিয়ে যায়। এরপর লাঞ্চিত শিক্ষক খাতাটি নিয়ে শ্রেণি কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান বলেন, “এ বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি থানায় অভিযোগপত্র দিতে পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।”
শিক্ষককে চড় মেরে ছাত্রটি গর্হিত অপরাধ করেছে, সে কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রের ছাত্রত্ব রাখবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন, “শিক্ষকদের হাত থেকে যেদিন বেত কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তারপর থেকেই এ ধরণের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। এটা তারই প্রতিফলন।”