সাভারের ট্যানারিতে চামড়া রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে কাঁচা চামড়া। এতে ট্যানারিপল্লীতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। কাজের চাপ বেশি থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শ্রমিক নিয়ে লবণ দেওয়ার কাজ করাচ্ছেনমালিকরা। তবে চামড়ার দাম নিয়ে তারা সন্তুষ্ট থাকলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের অভিযোগ।
বুধবার (১৯ জুন) সকালে সাভার হরিণধারা এলাকায় বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে ঘুরে মালিক, আড়তদার ও শ্রমিকদের চামড়া নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা থেকে চামড়া কিনে সাভারের মুসলিম ট্যানারিতে নিয়ে আসে মৌসুমি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান। তিনি বলেন, “মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা থেকে ৭ হাজার পিস চামড়া সাভারের ট্যানারিতে নিয়ে এসেছি। আকারভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা দরে চামড়া কিনে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ট্যানারিতে এখনও দাম নির্ধারণ করেনি। লবণ জাতকরণের পরে ট্যানারি মালিক দাম নির্ধারণ করবে।”
রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে চামড়া নিয়ে ট্যানারিতে এসেছেন ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন । তিনি বলেন, “আমরা ৩শ ৬ পিস চামড়া কিনেছি সাড়ে ৭শ টাকা করে। কিন্তু আজকে বাজার মাইর খাইয়া গেছে। এখন আড়াইশ টাকা করে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজার খুবই খারাপ, প্রচুর টাকা লস হয়ে গেলো আমাদের।”
এভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
আড়তদার হাজী মোহাম্মদ মোতাহার বলেন, “আমরা এখন নামধারী ব্যবসায়ী। পুঁজি ভেঙে খাইতাছি। সরকারি নির্ধারিত লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১২শ টাকা করেছে। কিন্তু কাঁচাচামড়া ৫০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
অপরদিকে ট্যানারি মালিকপক্ষ বলছে, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা হচ্ছে। একই সঙ্গে এ বছরের চামড়ার গুণগত মান ঠিক রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে চামড়া কিনছেন ট্যানারি মালিকরা।
ইসলামিয়া ট্যানারির সুপারভাইজার আমানউল্লা বলেন, “আমরা মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করছি। সাড়ে ৪ হাজার চামড়া কিনেছি। এগুলো শ্রমিকদের মাধ্যমে লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।”
ঢাকার বাইরের চামড়া গুলো সপ্তাহখানেক পরে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এশিয়া ট্যানারির ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, এবার আবহাওয়া টা ভালো ছিল। কিন্তু কিছু কিছু অদক্ষ কারিগরের জন্য চামড়া সামান্য নষ্ট হয়েছে। এখনো ঢাকার বাইরের চামড়া আসেনি। আমাদের চাহিদা ২০-৩০ হাজার। কিন্তু মাল আসছে মাত্র ২ হাজার। চাহিদামতো এখনও চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে চামড়া দামের ক্ষেত্রে দুইটি গ্রেডে ভাগ করেছি। বড় চামড়াগুলো ‘এ’ গ্রেডে নেওয়া হয়েছে আর ছোট চামড়াগুলো ‘বি’ গ্রেডে।‘ ‘এ’ গ্রেডের চামড়াগুলো ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে ক্রয় করা হচ্ছে এবং ‘বি’ গ্রেডের চামড়া সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকা দাম দেওয়া হয়েছে।