গাছ কথা বলছে, এমন সংবাদে চারদিকের মানুষ এসে ভিড় করতে গাছের কাছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে অবশেষে কেটে ফেলা হলো গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার আলোচিত সেই ‘কথা বলা’ গাছটি। এতে অবসান হলো প্রতারণা করে টাকা কামানোর অপচেষ্টা।
শনিবার (২২ জুন) দুপুরে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান টুটুলের উপস্থিতিতে গাছটি কেটে ফেলেন স্থানীয় লোকজন।
কয়েক দিন ধরে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গর্জিনা গ্রাম। ওই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী সবুর মিয়ার বাগানের একটি গাছ ‘কথা বলছে’ এমন অপ্রচারের ডালপালা ছড়ায় চারদিকে। তা এলাকা ছাড়িয়ে দেশের অন্যন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়লে দূরদূরান্ত থেকে আসতে থাকে উৎসুক মানুষ। কেউ কেউ মানতও করতে শুরু করেন। গাছের গায়ের সঙ্গে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করে থাকে মানুষ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ। গাছটি কাটার সময় ভিড় করে স্থানীয় মানুষসহ দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরাও। এ সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মুকসুদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, মুকসুদপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাঘদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান টুটুল বলেন, ‘গত একসপ্তাহ যাবত বিভিন্ন ভাবে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দেয়ার কারণে দেশব্যাপী মানুষ জানছে গাছে কথা বলে। আসলে গাছে কোন কথা বলে না। গাছটি লম্বা হওয়ায় বাতাসে যখন বাধে তখন গাছে একটা শব্দ হয়। কেউ কেউ মনে করছে গাছে কথা বলছে। এটা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক। যার কারণে সারাদেশে একটা আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনসহ এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে আমরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিই। এটা একটা অযৌতিক ও কুসংস্কার। ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে। এই কুসংস্কার আমরা পছন্দ করি না। আলেমরাও বিশ্বাস করে না। এ ব্যাপারে গাছের মালিকের সঙ্গে কথা বলে তাকে বোঝানো হয়েছে। সে বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। মালিকও চায় না এখানে এত জনসমাগম হোক, তাই গাছটি কাটা হয়েছে।’
মুকসুদপুর থানা ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, “স্থানীয় চেয়ারম্যান গ্রামবাসীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে গাছটি কেটে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয় সে জন্য আমারা উপস্থিত ছিলাম।”