• ঢাকা
  • বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩০, ২ শাওয়াল ১৪৪৬

স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ


বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ
আত্মসমর্পণ করা আবুল কালাম আজাদ। ছবি : প্রতিনিধি

বরগুনায় পৌর শহরের হাতের রুলি নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি হলে ধারাল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী মোসা. আছমা আক্তার পুতুলকে হত্যা নিশ্চিত করে নিজেই থানায় এসে অপরাধের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেছেন আবুল কালাম।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বরগুনা পৌর শহরের কলজে রোডস্থ বাগান বাড়ি এলাকায় জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনা ঘটে।  

ঘটনার সত্যতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।

নিহত গৃহবধূ আছমা আক্তার পুতুল (৩০) জেলার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের বকুলতলী এলাকার ইউনুসের মেয়ে। পুতুল পুবালি ব্যাংক বরগুনা শাখায় অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন।

ঘাতক স্বামী আবুল কালাম (৩৫) বরগুনা পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি সড়কের বড়িয়াল পাড়া এলাকার আবদুল করিম আকনের ছেলে। পেশায় একজন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী।

ওই গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

বরগুনা থানা সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবুল কালাম নামের ওই ব্যক্তি থানায় এসে তার স্ত্রী আসমা আক্তার পুতুলকে ধারাল ছুরি কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবহৃত ছুরি লেকের পানিতে ফেলে দিয়েছেন। তথ্যমতে আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে নিয়ে পৌর শহরের কলেজ রোডস্থ বাগানবাড়ী এলাকার জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় গিয়ে গুরুতর আহত রক্তাক্ত অবস্থায় পুতুলকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে  হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক পুতুলকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ পুতুলের গালে ধারাল অস্ত্রের কোপের গভীর ক্ষতসহ মাথায় ও পেটে আঘাতের চিহ্ন আছে। পারিবারিক কলহের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১০-১২ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় আবুল কালাম আজাদ ও পুতুল। দাম্পত্য জীবনে তাদের ১ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। পারিবারিক কলহের জেরে আগেও একবার এই দম্পত্তির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছিল। পরে আবুল কালাম আজাদ ও পুতুলের সম্মতিতে আবারও সংসার পেতেছিল এই দম্পতি।

বাড়ির মালিক রাসেল মিয়া বলেন, “পুতুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে আমি ঘটনার বিষয় জানিয়েছিলাম। আবুল কালাম ও পুতুল বছর খানেক আগে আমার বাসায় ভাড়া এসেছে। এই সময়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কলহ দেখতে পাইনি। আজকের এ ঘটনার বিষয়ে আমরা বা পার্শ্ববর্তী ঘরের লোকজন কোনো চিৎকার চেঁচামেচির শব্দও শুনতে পায়নি। এমনকি তাদের বড় মেয়েকে কোনো শব্দ করতে শুনিনি।”

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “এক ব্যক্তি থানায় এসে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে জানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হওয়া অবস্থায় পুতুল নামের ওই গৃহবধূকে দেখতে পায় পুলিশ। উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পুতুলকে মৃত ঘোষণা করে। ঘাতক স্বামী আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার ও পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান আছে।”

Link copied!