পড়লে বই আলোকিত হই, না পড়লে বই অন্ধকারে রই—এই স্লোগানকে সামনে রেখে কাজ করছে সুনামগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। ১৯৮৩ সালে সরকারীকরণের মাধ্যমে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা এ প্রতিষ্ঠানটি জনবল সংকটে ধুঁকছে।
যেখানে বিভিন্ন পদে আটজন কর্মরত থাকার কথা, সেখানে একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান ও একজন নাইট গার্ড দিয়ে চলছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি।
সুনামগঞ্জ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারটি জেলার পৌর শহরের হোসেন বখত চত্বরসংলগ্ন স্থানে স্থাপিত। এর যাত্রা শুরু ১৯৫৪ সালে। ২০১১ সালে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালীন গণগ্রন্থাগার প্রায় পাঠকশূন্য ছিল। অবশ্য সে সময় সীমিত আকারে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে কিছু পাঠক আসতেন। এখন পাঠক সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু জনবল বাড়ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ৮টি পদের মধ্যে লাইব্রেরিয়ান, ক্যাটালগার, লাইব্রেরি অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, বুক সর্টার, অফিস সহায়ক মিলিয়ে মোট ৬টি পদ শূন্য রয়েছে। তব বর্তমানে কর্মরত ২ জন রয়েছেন। তার মধ্যে একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান অপরজন নিরাপত্তা প্রহরী। লাইব্রেরি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদ ছাড়া বাকি পদগুলোয় কখনোই পদায়ন হয়নি।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থী নাজমুন নূর শ্রেষ্ঠ জানান, সরকারি গণগ্রন্থাগারের সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জনবল নিয়োগ করা খুবই প্রয়োজন। জনবল না থাকায় বইসহ নানান বিষয়ে জটিলতায় পড়তে হয়। একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চাহিদা ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না।
সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান রুহিত বলেন, “আমি প্রতিদিন গণগ্রন্থাগারে যাই। নিজের পছন্দের ও প্রয়োজনীয় বই পাই এবং পড়ি ভালো লাগে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের বই সংযোজন করলে ভালো হয়। সেই সঙ্গে গণগ্রন্থাগারটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।”
জুনিয়র গ্রন্থাগার আনিসুর রহমান জানান, জনবল সংকটের কারণে রীতিমতো আমি হিমশিম খাচ্ছি। আমাকে একাই সব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।”