ইউটিউবে ভিডিও দেখে ডাব বিক্রেতা থেকে সফল চাষি হয়েছেন জয়পুরহাট ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমদপুর ইউনিয়নের ধনতলা রসুলপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ (৩৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রশিদ স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু সেখান থেকে যে আয় হতো তা দিয়ে সংসার চলত না। পরে তিনি দারিদ্রতা ঘোচাতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে গিয়ে ফুটপাতে ডাব বিক্রি শুরু করেন। সেখানে বসে মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে চিন্তা করেন ক্যাপসিকাম চাষ করার। পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে গ্রামে ফিরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় এক একর জমি বর্গা নেন। এরপর স্থানীয় নার্সারি থেকে ১৬ হাজার ক্যাপসিকাম চারা সংগ্রহ করে রোপন করেন। চাষের শুরু থেকে রাসয়নিক ও জৈব সার, কিটনাশক, লেবার খরচসহ এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় করেন।
দুই মাস পরির্চযার পর চলতি মাসের জানুয়ারিতে ফল সংগ্রহ শুরু হয়। পনের দিন পরপর কয়েক ধাপে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন আব্দুর রশিদ। বর্তমানে তার গাছে যে পরিমাণ ক্যাপসিকাম রয়েছে তা আরও ৬ লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা এই কৃষকের।
আব্দুর রশিদ বলেন, “ইউটিউবে ভিডিও দেখে আমি ক্যাপসিকাম চাষে উদ্বুদ্ধ হই। বর্তমানে বগুড়ার পাইকারি বাজারে আমার ক্যাপসিকাম প্রতি মণ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আরও এক একর জমি বর্গা নিয়ে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেছি। এতে প্রায় ৯-১০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছি।”
এদিকে দরিদ্র আব্দুর রশিদ হুট করে ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হওয়ায় তাকে নিয়ে জেলাজুড়ে বেশ কৌতুহল শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক চাষি তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে আসেন।
স্থানীয় কৃষক কালাম ফকির জানান, প্রথমবার ক্যাপসিকাম চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন আব্দুর রশিদ। রমজান মাসে বাজারজাত করতে পারলে আরও বেশি লাভবান হবেন। আগামী বছর আব্দুর রশির পাশাপাশি স্থানীয় অনেক কৃষক ক্যাপসিকাম চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এগ্রোয়ানের নার্সারির মালিক সাইম জানান, আব্দুর রশিদ টাইগার জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। এ জাতের ক্যাপসিকাম চাষে কৃষকরা সহজে লাভবান হতে পারেন।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকার বেশিরভাগ কৃষক ধান ও আলু চাষে অভ্যস্ত। কৃষক আব্দুর রশিদের মতো অন্যান্য কৃষকরা ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। ধান ও আলুর বাইরে এ জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে আমরা কাজ করছি।”