শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর একটি মহল দেশে অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালাচ্ছিল। এ ঘটনায় হবিগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনা রক্ষায় রাতভর পাহারা দিয়েছে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাসাবাড়িতে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হবিগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এ অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মন্দির রক্ষার আহ্বানের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্দিরের সামনে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেন তারা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্বেগের ব্যাপারে হবিগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ জানান, হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন, কালীবাড়িসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধানদের সঙ্গে আলাপ করে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
জি কে গউছ বলেন, “জেলায় কোনো অবস্থাতেই কোনো মন্দির বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কারও কোনো ক্ষতি করতে দেওয়া হবে না। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
ফেসবুকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নাবিল সাদ সামিন জেলা শহরের মন্দির ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ২৫০ স্বেচ্ছাসেবকের নাম প্রকাশ করে সার্বক্ষণিক পাশে থাকার ঘোষণা দেন। তিনি লিখেন, “সারা রাত জেগে আছি আজকে, প্রয়োজন লাগলে আরও কিছুদিন থাকব।”
সোমবার রাতে হবিগঞ্জের শহরের কেন্দ্রীয় কালীবাড়িসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তায় ছিলেন সমাজকর্মী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিক হোসেনসহ একদল যুবক। এ ব্যাপারে ইব্রাহীম খলিল সোহেল তার ফেসবুকে লিখেন, “মন্দির আমাদের দেশের ধর্মীয় সম্পদ। কোনো মন্দিরে, উপাসনালয়ে হামলা, এই ধরণের সহিংসতা রুখে দিতে আমরা তরুণ সমাজ জাগ্রত।”
হবিগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শংখ শুভ্র রায় বলেন, “গত রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা, বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকার অনেক সাধারণ মানুষ জেলার সকল মন্দির ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা পাহারা দিয়েছেন।” তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা রুখতে তাদের এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।