দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে যে যার মতো প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো ঝিনাইদহ। পথে-ঘাটে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং ও গণসংযোগ করে ভোট চাইছেন তারা। ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসছে প্রচার-প্রচারণায়ও গতি তত বাড়ছে।
ঝিনাইদহের কয়েকটি আসন ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নৌকা, লাঙ্গল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। শহরজুড়ে সাদা কালো পোস্টার সাটাতে ব্যস্ত কর্মী ও সমর্থকরা। ভোটাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা, দিচ্ছেন নানা রকম প্রতিশ্রুতি। মাইকিংসহ ফেসবুক, ইউটিউব সামজিক যোগাযোগমাধ্যেমেও কনটেন্ট, পোস্টার আপলোড করতে দেখা যাচ্ছে।
ভোটাররা জানিয়েছেন এবার প্রার্থী বেশি হলেও মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে।
জানা যায়, এবার নির্বাচনে ঝিনাইদহের চারটি আসনে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল হাই ‘নৌকা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ‘ট্রাক’, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিয়া আফরিন ‘ফুলকপি’, জাতীয় পার্টির মনিকা আলম ‘লাঙ্গল’, তৃণমূল বিএনপির কে এম জাহাঙ্গীর মাজমাদার ‘সোনালী আঁশ’, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিচুর রহমান ‘আম’ প্রতীক পেয়েছেন।
ঝিনাইদহ-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত তাহজীব আলম সিদ্দিকী ‘নৌকা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ‘ঈগল’, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলেন (জাসদ) ফজলুল কবির ‘মশাল’, বাংলাদেশ কংগ্রেস নাসির উদ্দিন ‘ডাব’, জাতীয় পার্টির মাহফুজুর রহমান ‘লাঙ্গল’, তৃণমূল বিএনপির জামিরুল ইসলাম ‘সোনালী আঁশ’, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) নজরুল ইসলাম ‘একতারা’, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শরীফ মোহাম্মদ বুলবুল হায়দার ‘ছড়ি’, এনপিপির মিজানুর রহমান মিজু ‘আম’, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির আব্দুল হান্নান খাঁ ‘হাত ঘড়ি’ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক ‘কুঁড়ে ঘর’ প্রতীক পেয়েছেন।
ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল (স্বতন্ত্র) ‘ট্রাক’, জাতীয় পার্টির আব্দুর রহমান ‘লাঙ্গল’, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ ‘ঈগল’ এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত সালাহ উদ্দিন মিয়াজী ‘নৌকা’ প্রতীক পেয়েছেন।
ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ‘নৌকা’, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ খোকন ‘ট্রাক’, জাতীয় পার্টির এমদাদুল ইসলাম বাচ্চু ‘লাঙ্গল’, স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ‘ঈগল’ এবং তৃণমূল বিএনপির নুর উদ্দিন আহম্মেদ ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক পেয়েছেন।
এ দিকে নির্বাচন ঘিরে প্রচার-প্রচারণার শুরুতে বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (১৮ডিসেম্বর) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাসুদেবপুর বাজারে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৪ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়া গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলার শাখারীদহ বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়া জাহেদী মহুলের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষ নৌকার সমর্থকরা হামলা চালিয়ে তাদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
এছাড়া সদর উপজেলার সাগান্না গ্রামে ঈগল প্রতীকের পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিনিধি ইউনুস আলী। ঝিনাইদহ-৪ আসনে গত মঙ্গলবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। উপজেলার সিংগী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে গেলে বাধা দেয় নৌকার সর্মথকরা। এসময় তাদের মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।