• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
আওয়ামী সরকারের পতন

কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ


আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ ঘরনার লোকজনের নিয়ন্ত্রণে থাকা পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটের স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। তাই যাত্রীরা বাধ্য হয়ে বর্তমানে লঞ্চ ও ফেরিতে চলাচল করছেন। তবে দ্রুত স্পিডবোট চালু করতে বিআইডাব্লিউটিএর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

যাত্রী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১৬ সালের দিকে এই নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়। কাজিরহাট থেকে আরিচা নৌরুটের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। এই রুটে ৪টি ফেরি ও ৯টি লঞ্চ চলাচল করে। তবে সময় কম লাগায় রাজধানীতে যাতায়াতের জন্য স্পিডবোটই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই রুটের যাত্রীদের কাছে। প্রতিদিন প্রায় এক হাজার যাত্রী এই রুটে স্পিডবোটে চলাচল করেন। ঈদের সময় প্রতিদিন কমপক্ষে দশ হাজার যাত্রী এই রুটে স্পিডবোটে পারাপার হন।

বিগত সরকারের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের লোকজনের মাধ্যমে স্পিডবোটগুলো পরিচালনা করতেন। কিন্তু ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান তারা। যার কারণে সেদিন থেকে বন্ধ রয়েছে স্পিডবোট চলাচল। এমন পরিস্থিতিতে লঞ্চ ও ফেরিতে চলাচল করছেন যাত্রীরা। তবে সময় বেশি লাগায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তারা। দাবি জানিয়েছেন দ্রুত স্পিডবোট চালু করার।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) কাজিরহাট ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে বেশ স্রোত। তার মাঝেই আরিচার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে ফেরি ও লঞ্চ। অনেকে ঘাটে এসে স্পিডবোট খুঁজছেন। যারা ফেরি বা লঞ্চে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তেমনি একজন বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ঢাকায় চাকরি করি। মাসে এক দু’বার বাড়ি আসা-যাওয়ায় স্পিডবোটেই যাতায়াত করি। এর কারণ সময় কম লাগে। আজকে ঘাটে এসে জানতে পারি স্পিডবোট চলাচল বন্ধ। যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে দ্রুত স্পিডবোট চালু করার দাবি জানাই।”

স্পিডবোট না পেয়ে লঞ্চে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “ব্যবসার প্রয়োজনে প্রায়ই ঢাকায় যেতে হয়। কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে দূরত্ব কম। দ্রুত ঢাকায় যাওয়া আসা যায়। আর স্পিডবোটে দেখা যায় ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে। অথচ ফেরি বা লঞ্চে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। এই দুর্ভোগ লাঘবে স্পিডবোট থাকলে সুবিধা হয়।”

কাজিরহাট ঘাটের স্পিডবোট ব্যবসায়ী ফেরদৌস হোসেন ও আব্দুল বাতেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিগত সরকারের সময় ১৫ বছর আওয়ামী লীগ নেতারা অবৈধভাবে স্পিডবোট ঘাট পরিচালনা করেছেন। যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বেশি নিয়েছেন। এই রুটে যেখানে ২০ থেকে ২৫টি স্পিডবোট চালানো যথেষ্ট। সেখানে তারা ৮০টি স্পিডবোট চালাতেন। বড় একটা স্পিডবোটে ১৬জন ধারণা ক্ষমতা, সেখানে তারা বেশি টাকার আশায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে ২১ জন নিতেন। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে জনবান্ধব স্পিডবোট চালু করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিএ’র নগরবাড়ী-কাজিরহাট-নরাদহ নদী বন্দরের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা স্পিডবোট মালিক সমিতির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। তারা আমাদের বারবার আশ্বস্ত করেও স্পিডবোট চালু করতে পারেননি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি, স্পিডবোট মালিকদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে বিগত সরকারের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। যার কারণে সরকার পতনের পর তাদের সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। এই প্রেক্ষাপটে, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে এই রুটে চলাচলকারী সকল স্পিডবোটের রুট পারমিট বাতিল করে, নতুনভাবে রুট পারমিট আহ্বান করার জন্য প্রস্তাব করেছি। আমরা দ্রুত স্পিডবোট সেবা চালু করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

Link copied!