বাতাসে ভেসে আসছে পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণ। সড়কের দুই পাশে কাঁঠালের স্তুপ। সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে কাঁঠালবোঝাই ভ্যান-ঠেলা-ইজিবাইক। পাশেই পিকআপে তোলা হচ্ছে কাঁঠাল। এমন চিত্র নরসিংদীর বেলাব উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পোড়াদিয়া বাজারের। কাঁঠালের বেঁচা-কেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে অধিক ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
জানা যায়, সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার এ বাজারের হাটবার হলেও মৌসুমে (জৈষ্ঠ্য- ভাদ্র) প্রতিদিনই জমজাট থাকে এই হাটের বেচাকেনা। এ বাজারে প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ হাজার কাঁঠাল বিক্রি হয়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাঁঠাল কেনার জন্য পাইকারি ক্রেতারা আসেন এই হাটে। বিক্রেতারাও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁঠাল তোলেন এখানে।
স্থানীয়রা জানান, বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ও পাটুলী ইউনিয়নে প্রচুর কাঁঠাল হয়। এই দুই ইউনিয়ন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার পাহাড়ি লালমাটির সব এলাকায় প্রচুর কাঁঠাল উৎপাদন হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে আকার, রঙ ও স্বাদের জন্য এ অঞ্চলের কাঁঠালের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে এ বছর প্রচুর উৎপাদন হলেও ক্রেতার চাহিদা কম। যার কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা জানান, ভোক্তাদের চাহিদা না থাকায় কাঁঠালের বিক্রি কমেছে। বাজারে ২৫-৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০-৭০ টাকা দরে কাঁঠাল ক্রয় করলেও পরিবহনসহ নানা খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা পর্যায়ে তা বেড়ে দাড়াচ্ছে কয়েকগুন। যার কারণে ক্রেতার চাহিদা কমতে থাকায় ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন তারাও।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে উন্নত মানের কাঁঠাল। বাম্পার ফলন হলেও স্থায়ীত্ব কম থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায্যমূল বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা। ফলটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপরমহলে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।