শরীয়তপুরে জেলেদের মাঝে বিতরণ করা ভিজিএফ কর্মসূচির চালের বস্তায় এখনো পতিত সরকার শেখ হাসিনার নাম সম্বলিত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দীর্ঘ সাত মাস অতিবাহিত হলেও সরকারি চালের বস্তায় তার নাম লেখা থাকায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। যা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাটসহ চারটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিবন্ধিত ১৫ হাজার ৪৪৬ জন জেলের মাঝে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হয়। দুই মাসের জন্য বরাদ্দ করা ৮০ কেজি চাল প্রতিজন জেলেকে প্রদান করা হয়। তবে বিতরণ করা ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তায় লেখা রয়েছে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ স্লোগান। কোন কোন জায়গায় কালো রঙের স্প্রে দিয়ে লেখাটি ঢাকার চেষ্টা করা হলেও অনেক জায়গায় এই লেখা সম্বলিত বস্তার চাল জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হয়। জেলার ভিজিএফ চাল বিতরণ কেন্দ্রের প্রায় অধিকাংশ স্থানের প্রতিটি ৩০ কেজি চালের বস্তার ওপরে এই লেখাটি বিদ্যমান ছিল।
কোদালপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন খান বলেন বলেন, “গত বুধবার চালসহ এই বস্তাগুলো খাদ্যগুদাম থেকে এনে জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল। সেখানে শেখ হাসিনার নাম কালো কালি দিয়ে মুছে দিয়েছিল। তবে কিছু বস্তায় এই নামগুলো রয়ে গিয়েছিল।
বিষয়টি নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুরের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, “শেখ হাসিনা তার এমপিদের নিয়ে পালিয়ে গেলেও তৃণমূল থেকে সচিবালয় পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে তার দোসররা রয়ে গেছে। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা শেখ হাসিনার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সরকারি চাল এদেশের নাগরিকদের ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার পতনের পরেও চালের বস্তায় তার নাম থাকা বিষয়টি দুঃখজনক। খাদ্য অধিদপ্তর ও ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ জানাই তারা দ্রুত এই বস্তা গুলো ব্যান করে, অন্যথায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলে এর দায়ভার রাষ্ট্র কিংবা জনগণ নেবে না।”
দক্ষিণ তাঁরাবুনিয়া ইউনিয়নের চাল বিতরণের ট্যাগ অফিসার ফিরোজ মিয়া বলেন, “৫ আগস্টের পরে একটি পরিবর্তন এসেছে সেক্ষেত্রে এই সংস্কারটি প্রয়োজন ছিল। চালের বস্তায় নামের বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা আশা করি, পরবর্তী চাল বিতরণে লোগো পরিবর্তন করে দেওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির বলেন, “বিগত সরকারের সময় বিভিন্ন সময়ে বস্তাগুলো কেনা হয়েছিল। তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই লেখাটি লেখা ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নতুন সরকারের নির্দেশ ছিল বস্তা থেকে লেখাগুলো মুছে দেওয়ার জন্য। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি স্প্রে দিয়ে নামটি মুছে দেওয়ার জন্য। পরবর্তীতে চাল বিতরণের সময় এই নামটি মুছে না দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”