• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

১০০ টাকার বিনিময়ে আদালতে আসামির জায়গায় শারমিন


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
১০০ টাকার বিনিময়ে আদালতে আসামির জায়গায় শারমিন

১০০ টাকার বিনিময়ে আসামি শরিফার পক্ষে আদালতে হাজিরা দিতে এসে ধরা পড়েছেন শারমিন আক্তার নামে এক নারী।

রোববার (১৫ সেপ্টম্বর) বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হানীমুন তানজিনের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় শারমিন আক্তারসহ সেতারা নামের আরও এক নারীকে প্রতারণার অভিযোগে আটক করা হয়। পরে আদালতে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

বাদী পক্ষের আইনজীবী বাপ্পি শর্মা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভূঁয়া হাজিরার বিষয়টি আদালতের কাছে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ভাড়া করা শারমিন উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পাগলির বিল এলাকার বাসিন্দা আলী আহমদের স্ত্রী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পশ্চিম ভাদিতলা গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালায় স্থানীয় জসিম উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, শরিফা, সেতারা ইয়াছমিন ও আবেদাসহ অন্যরা। তাদের হামলায় আহত হন অন্তঃসত্ত্বাসহ তিনজন। এ ঘটনায় জসিমকে প্রধান আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালত ঈদগাঁওতে মামলা করেন আবু বক্কর ছিদ্দিকর স্ত্রী কুলসুমা বাহার।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মামলার ধার্য দিন ছিল। যথারীতি আদালত চলাকালীন সময় আসামিরা হাজিরা দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান। এ সময় বাদী কুলসুমা আদালতে অভিযোগ করেন কাটগড়ায় দাঁড়ানো শরিফা নামে নারী প্রকৃত আসামি নন। শরিফা আদালত প্রাঙ্গণেই আসেনি।

আসামি পক্ষ এই নারীকে শরিফা সাজিয়ে হাজিরা দিতে ভাড়া করেছেন। বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামিদের নাম ঠিকানা যাছাই করে প্রতারণার সত্যতা পেয়ে শারমিন ও সেতারা নামে দুইজনকে আটকের নির্দেশ দেন। পরে বিজ্ঞ আদালত বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালত ঈদগাঁও আদালতের বেঞ্চ সহকারী মকছুদ আহমেদ জানান, এ ঘটনায় আদেশনামা মূলে কক্সবাজার সদর আদালতে মামলা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ শফি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এ ঘটনায় আদালত বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় সেতারা ও শারমিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

বাদী পক্ষের আইনজীবী বাপ্পি শর্মা জানান, “আদালতে ভূঁয়া হাজিরা দেওয়াটা অপরাধ এবং পেশা পরিপন্থী কাজ। আসামি সেতারাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এসব প্রতারণা দিন দিন বাড়বে। পাশাপাশি আইনজীবীদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।”

আসামি পক্ষের আইনজীবী আবদুল হালিম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “সেতারাসহ চার আসামির হাজিরা ও একজন মহিলা আত্মসমর্পণের কথা ছিল। আমিও সে মতে হাজিরা ও জামিন আবেদন করি। কিন্তু তারা একশ টাকায় একজন নারীকে ভাড়া করে শরিফা সাজিয়ে কাঠগড়ায় তোলেন। সেটি আদালতের কাছে ধরা পড়ে যায়। বিষয়টি আমি জানতাম না, তারা আমাকে জানায়নি।”

Link copied!